• বিল্ডিং ভাঙার পাথর-ইট বিছানো রাস্তা, স্ট্রেচারে শোয়া রোগী কাহিল
    বর্তমান | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: খুব বেশি হলে দু’শো মিটারের পথ। দেখে মনে হবে বীরভূমের গ্রামের লালমাটির রাস্তা। এই রাস্তাতে স্ট্রেচার, হুইলচেয়ার ঠেলে ঘাম ঝরিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। ভাঙা ইট, পাথরের টুকরোয় ভরে আছে গোটা রাস্তা। এবড়ো-খেবড়ো এই রাস্তা দিয়ে স্ট্রেচারে শুয়ে যেতে ক্রমাগত ঝাঁকুনিতে আরও কাহিল হয়ে পড়ছেন রোগীরা। এমন ঘটনায়  উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবায় রোগীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও সুব্যবস্থার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। 


    উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যৌথ উদ্যোগে যে এমআরআই সেন্টারটি রয়েছে তার সামনের রাস্তার এই বেহাল দশা নিয়ে প্রতিদিনই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। এই রাস্তা দিয়েই যেতে হয় এইচডিইউ ও ডায়ালিসিস ইউনিটে। 


    প্রতিনিয়ত এই রাস্তার জন্য রোগীর পরিবারের লোকেদের হয়রান হতে দেখেও হুঁশ নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অথচ করিডরের ভালো বারান্দায় সম্প্রতি নতুন করে মার্বেল বসানো হয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় এমআরআই সেন্টারের সামনে গোটা এলাকায় বর্ষাকালে হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায়। নোংরা জমা জল ভেঙেই সকলকে যাতায়াত করতে হয়। সেই সমস্যার সমাধানের জন্য নতুন রাস্তা না বানিয়ে পুরোন বিল্ডিং ভাঙার ইট, পাথর ফেলে উঁচু করা হয়েছে। তাতে জলজমার হাত থেকে রেহাই মিললেও নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভাঙা ইট, পাথরের টুকরো যেভাবে গেঁথে রয়েছে তাতে স্ট্রেচার, হুইলচেয়ার ঠেলে  নিয়ে যাওয়া যায় না। 


    সম্প্রতি কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা আতাউর রহমান চিকিৎসার জন্য তাঁর বাবাকে এখানে ভর্তি করেছিলেন। তিনি বলেন, ওয়ার্ড থেকে স্ট্রেচারে করে বাবাকে এমআরআই সেন্টার নিয়ে যেতে চূড়ান্ত হয়রান হতে হয়েছে। ভাঙা ইট, পাথরে ভরা এই রাস্তা দিয়ে স্ট্রেচার এগতেই চায় না। জোর করে ঠেলে নিয়ে যেতে  ঝাঁকুনিতে বাবা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। 


    বৃহস্পতিবার একই সমস্যায় পড়েন ইসলামপুরের শ্যামল নন্দী। তিনি বলেন, বন্ধুর বাবা এমআরআই করাতে এই রাস্তা দিয়ে যেতে কাহিল হয়ে পড়েছি। জোর করে ঠেলতে গিয়ে স্ট্রেচার উল্টে যাচ্ছিল। আর জি কর কাণ্ডের পর জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে নিরাপত্তা জোরদার করতে ঢালাও সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। ডাক্তারদের রেস্টরুম ঝাঁ চকচকে হয়ে উঠছে। অথচ রোগীদের হয়রানির দিকগুলি নিয়ে ভাবা হচ্ছে না। 


    হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ডাঃ নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হাসপাতালের পরিকাঠামো সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এমআরআই ইউনিটের সামনের রাস্তা নতুন করে করা হবে। ডিজিটাল এক্স-রে ইউনিটের সামনের রাস্তাও ঠিক করে সেখানে ছাউনি দেওয়া হবে। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)