বিডিও অফিসে কর্মখালি! বালুরঘাটে সক্রিয় প্রতারণা চক্র, জয়েন্ট বিডিওর নাম করে ভুয়ো ফোন প্রধানদের
বর্তমান | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, পতিরাম: পুরসভার চেক জালিয়াতির তদন্ত শেষ হতে না হতেই এবার নতুন চক্রের হদিশ বালুরঘাটে। বিডিও অফিসে পদ ফাঁকা রয়েছে,আজকের মধ্যেই অত্যন্ত গোপনে যোগাযোগ করতে হবে। এমন টোপ দিয়ে বুধবার বালুরঘাট ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে ফোন করে চক্রীরা। তবে কেউ এই ফাঁদে পা দেননি।
বালুরঘাটের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিডিও অফিস এবং বালুরঘাট থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। ডিএসপি হেডকোয়ার্টার বিক্রম প্রসাদ বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বালুরঘাটের বিডিও সম্বল ঝা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন এসব প্রতারণা চক্রের জাল। তাঁর মন্তব্য, আমাদের অফিসে কোনও কর্মখালি নেই। চাকরির জন্য নিয়োগ করা হলে সংবাদপত্র বা ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আমাদের একাধিক প্রধানকে জয়েন্ট বিডিওর নাম করে ফোন করা হয়েছিল। প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁরা বালুরঘাট থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। এই ফোন কল কে করল জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এবিষয়ে বোয়ালদার পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক মাহাতোর মন্তব্য, আমার কাছে ফোন এসেছিল। ব্যস্ত থাকায় প্রথমে কথা বলতে পারিনি। পরে উপপ্রধানের মোবাইলে ফোন করা হয়। তখন বিডিও অফিসে ভ্যাকেন্সির কথা জানিয়ে গোপনে নাম পাঠাতে বলা হয়। দেখা করার কথা বললেও উল্টোদিকের ব্যক্তি রাজি হয়নি। তখনই বুঝতে পারি জালিয়াতির ছক কষেছে কেউ।
পুলিস ও প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই ভুয়ো কলার অফিস থেকে প্রথমে বালুরঘাট ব্লকের ১১ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধানদের নম্বর জোগার করে। পরপর তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল চক্রী। ইতিমধ্যে বালুরঘাটের ডাঙ্গা, বোয়ালদার, নাজিরপুর ও ভাটপাড়ার প্রধান, উপপ্রধানদের কাছে ফোন গিয়েছে বলে বিডিও অফিস সূত্রে খবর। বাকি পঞ্চায়েতগুলিকে সতর্ক করেছে প্রশাসন।
ওই ভুয়ো কলে প্রথমে চাকরির টোপ দেওয়া হয়। মুলত টাকা হাতানোর পরিকল্পনা ছিল ওই কলারের। পুলিসের অনুমান, ওই ব্যক্তি কোনও চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তবে পরে ওই ফোনে আর যোগাযোগ করা যায়নি। সম্প্রতি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপনের একটি স্কুলে ট্যাবের টাকা প্রতারণা করা হয়েছিল। এরপর জেলা সদর বালুরঘাট পুরসভাতেও চেক জালিয়াতি করে করে সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা গায়েব করা হয়। এবার প্রধানদের ভুয়ো কল করা নিয়ে ফের আলোড়ন।
বালুরঘাটের ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আলপনা বর্মনের মন্তব্য, আমাকে শুক্রবারের মধ্যে যোগাযোগ করতে বলেছিল। জয়েন্ট বিডিওদের ফোন নম্বর সেভ ছিল, তাঁদের গলাও চিনি। তাই প্রশ্ন করলে জালিয়াত বিডিওর পরিচয় দিয়ে বলে ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ফোন করছি। এই ঘটনার কথা ব্লক অফিসে জানালে আসল কথা সামনে আসে। শুনেছি আরও কয়েকজন প্রধানকে ফোন করা হয়েছিল।