দুর্গাপুরে প্রতিবেশীর গুল নষ্ট করায় অপমান, আত্মঘাতী ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র
বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: প্রতিবেশীর গুল (জ্বালানি) নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ করায় অপমানিত হয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। মৃতের নাম সুরজ ঠাকুর (১৩)। সে নেপালিপাড়া হিন্দি হাই স্কুলের পড়ুয়া। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুর কোকওভেন থানার উড ইন্ডাস্ট্রি এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এদিন মৃতের পরিবার ও এলাকাবাসী ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিবেশী মহিলার বাড়িতে চড়াও হয়। গাড়িতে করে মৃতদেহ নিয়ে অভিযুক্তের বাড়ির সামনে চলে বিক্ষোভ। তাদের একটি অস্থায়ী দোকানের কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, দোষী ওই মহিলার কঠোর শাস্তি চাই। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিস বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন দুপুরে সুরজ স্কুলে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরছিল সাইকেল চালিয়ে। প্রতিবেশী মহিলা তুলসি রুইদাস রাস্তার পাশে গুল শুকোতে দিয়েছিল বলে দাবি। ওই গুলের ওপর দিয়ে সাইকেল চালিয়ে সুরজ গুল নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করেন প্রতিবেশী মহিলা। সন্ধ্যাবেলায় সুরজের বাড়িতে এসে সুরজকে ওই মহিলা চরম অপমান করে বলে অভিযোগ। সেই সময় সুরজের বাবা ও মা ঘরেই ছিলেন। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই একটি ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ করে ঢুকে যায় সুরজ। তার মা-বাবা ডাকাডাকি করতে কোনও সাড়াশব্দ মেলে না। দরজা ভাঙতেই তাঁদের নজরে পড়ে গলায় গমছার ফাঁস দেওয়া সুরজের দেহ। তড়িঘড়ি তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। এদিন সকালে ওই হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত হয়। তারপর মৃতদেহ নিয়ে এসে অভিযুক্ত মহিলার বাড়ির সামনে চলে বিক্ষোভ।
মৃতার মা পিঙ্কি দেবী বলেন, আমার একমাত্র ছেলে। গুল নষ্ট করে দিয়েছে বলে প্রতিবেশী মহিলা তাকে যাচ্ছেতাই ভাবে অপমান করল। এমনকী সুরজকেই গুল বানিয়ে দিতে হবে বলে জোর করছিল। সুরজের বাবা তাও ওই মহিলাকে বলল, আমি গিয়ে তোমার গুল দিয়ে আসছি চল। কিছুতেই শুনল না মহিলা। ওই মহিলার অপমান সহ্য করতে না পেরে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। আমি চাই ওই মহিলার কঠোর শাস্তি হোক। যদিও পুলিসের দাবি, এই ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।