• শীতের আমেজ দেখা দিতেই তৎপর শিউলিরা ‘খেজুর গাছ এভাবে কমলে রস পাব কী করে? সরকার দেখুক!’
    বর্তমান | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কল্যাণী: খানিক আগেই শীতের আমেজ এসেছে এই মরশুমে। সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার কিছুটা আগেই, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শিউলিদের রস সংগ্রহের তৎপরতা শুরু হয়েছে গ্রামে গ্রামে। ঠান্ডার ভাব আসতেই শিউলিরা খেঁজুর গাছ ঝোড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।


    আগে চাষের জমির আলে এবং এলাকায় পুরনো বাড়ির মধ্যে খেজুর গাছ দেখা যেত। সাধারণত গাছ হিসেবে লিজ নেন শিউলিরা। যে এলাকায় খেজুর গাছের সংখ্যা বেশি, অনেক সময়ে সেখানেই ত্রিপল টাঙিয়ে ঘর তৈরি করে থাকেন তাঁরা । কারণ শীতের এই চার মাস হাঁড়ি পাহারা দিতে হয় তাঁদের। শিউলিদের আক্ষেপ, চাষের জমি দখল করে বাড়িঘর হয়ে যাওয়ায় খেজুরগাছের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। তাই সংখ্যায় কমেছে শিউলিও। আবার অনেক শিউলি বয়সজনিত কারণে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের সন্তানেরা আর এই পেশায় আসতে চাইছেন না। বর্তমানে দু-তিনটে গ্রাম ঘুরে এক থেকে দু’জন শিউলির দেখা মেলে। ফলে খেজুর গুড়ের চাহিদা থাকলেও গাছের অভাবে রসের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। গাছে হাঁড়ি বাঁধলেও এখনও চাকদহ ও কল্যাণী ব্লকের শিউলিরা গাছ ঝোড়ানো শুরু করতে পারেননি।


    সমীর প্রামাণিক নামে এক শিউলি বলেন, রাজ্য সরকার শীতকালে পিঠেপুলির মেলা করে। অথচ শিউলিদের কথা তাদের মনে পড়ে না। শিউলিরা অনেক কষ্ট করে গাছ থেকে রস বের করে জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন। সেই গুড় দিয়েই তো পিঠে হয়। প্রশ্ন একটাই, যদি শিউলিরাই না থাকেন, তবে গাছ থেকে রস বের করে জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি হবে কী করে, আর তা বাঙালির কাছে পৌঁছবেই বা কী করে? আশা করব, গাছের এই সমস্যা এবং আমাদেরও নানা সমস্যার কথা সরকার ভাববে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)