• অভিষেকের অপরাধে হাতেখড়ি হয়েছিল শিলিগুড়িতে, দাবি পুলিশের
    আনন্দবাজার | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • তার অপরাধের জাল বিস্তৃত ছিল বিদেশে। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, অপরাধ শুরু হয়েছিল শিলিগুড়ি থেকে। ২৫০ কোটি টাকার সাইবার প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হওয়া অভিষেক বনসলের নাম বছর দুয়েক আগে অন্য একটি অপরাধের মামলায় জড়িত হিসাবে জানতে পেরেছিল শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট। অভিযোগ ছিল, শহরের কয়েকশো লোকের অ্যাকাউন্ট ভাড়ায় নিয়ে তাতে সাইবার অপরাধের টাকা লেনদেন করত অভিষেক। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পুলিশের খাতায় নাম উঠতেই রাতারাতি উধাও হয়ে যায় সে। এর পরে বিদেশে ঘাঁটি গেড়ে সেখান থেকেই কোটি কোটি টাকার প্রতারণার চক্রের ‘কিং পিন’ হয়ে উঠেছিল অভিষেক।

    রাজ্য পুলিশের সাইবার শাখা ও বিধাননগর সিটি পুলিশ অভিষেক-সহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। এই চক্রের মূল ‘মাথা’ সেই অভিষেকই। শিলিগুড়ির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড়ার এম আর রোডে থাকত সে। সেখানেই একটি আবাসনে তার ফ্ল্যাট রয়েছে। সূত্রের দাবি, তার পরিবার সেখানেই থাকে। যদিও আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর দাবি, “অভিষেক অনেক দিন থাকেন না এখানে। পরিবার এখানে থাকত। এখন কোথায় থাকে, জানি না।” শিলিগুড়ির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি শালিনী ডালমিয়া বলেন, ‘‘যে আবাসনে লোকটি থাকত, সেখানে বাইরের লোকজন বেশি থাকে। ওর সম্পর্কে এর বেশি কিছু জানা নেই।”

    ২০২২ সালে পতিরামজোতে একটি বাড়িতে হানা দেয় মাটিগাড়া থানা, গোয়েন্দা বিভাগ এবং এসওজি (স্পেশ্যাল অপারেশন্‌স গ্রুপ)। বাড়িটি থেকে প্রচুর ব্যাঙ্কের পাসবই, ডেবিট কার্ড উদ্ধার হয়েছিল। গ্রেফতার করা হয়েছিল তিন জনকে। তদন্তে উঠে আসে, ৫ নম্বর ওয়ার্ড ও সংলগ্ন এলাকার কিছু দুঃস্থ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে তার মাধ্যমেই প্রতারণার টাকা লেনদেন হত। অ্যাকাউন্টপিছু এক-এক জনকে আট হাজার টাকা ভাড়া হিসাবে দেওয়া হত বলেও জানা যায়।

    পুলিশ সূত্রের দাবি, সেই মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অভিষেকের নাম উঠে এসেছিল। তবে পুলিশ তার নাম জানার আগেই শিলিগুড়ি ছেড়ে গা-ঢাকা দেয় সে। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার সুবাদে ব্যবসায়ীদের হিসাবনিকাশ দেখত। কিন্তু করোনা-পর্বের আগে থেকে সেই কাজ তার কর্মীরা দেখাশোনা করত বলে খবর। শহরের বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী ও আধিকারিকদের সঙ্গেও ওঠাবসা ছিল অভিষেকের। অভিযোগ, ভুয়ো নথি বানিয়ে ঋণ পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে তাতে লেনদেন করাত সে। কিন্তু চুপিসারে প্রতারণার এত বড় ‘সাম্রাজ্য’ সে বানিয়ে ফেলেছিল জেনে কিছুটা অবাক শিলিগুড়ির পুলিশকর্তারা।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)