• হারভেস্টরে ধান কাটায় নেই খড়, গো-খাদ্যের জোগান নিয়ে চিন্তা
    বর্তমান | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কান্দি: আমন ধান কাটতে ব্যবহার হচ্ছে কম্বাইন হারভেস্টর। চিন্তা বাড়ছে গো-পালকদের। সারা বছরের খড়ের জোগান নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন পশুপালকরা। যদিও কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহারে ধান কাটার খরচ কমছে কয়েকগুণ। তাই চাষিরা সেদিকেই ঝুঁকছেন।  


    প্রসঙ্গত, কান্দি মহকুমা এলাকায় এবছর প্রায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এরমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ ফসল। সম্প্রতি আমন ধান কাটার সময় হয়েছে। কান্দি মহকুমা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে মহকুমা এলাকায় প্রায় ২০ শতাংশ আমন ধান মাঠ থেকে গোলায় উঠেছে।


    কিন্তু ধান গোলায় বা কিষানমাণ্ডিতে গেলেও খড় আসছে না আঙিনায়। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জমিতে নামানো হচ্ছে কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন। অল্প সময়ে অধিক ধান কাটার জন্য এলাকায় খুব অল্প সময়েই চাহিদা বেড়েছে। মাত্র ১১০০ টাকা খরচ করলে এক বিঘে জমির ধান কাটা হচ্ছে হারভেস্টার ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটলে প্রায় ৪২০০ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটলে খড় পাওয়া যায়। ভরতপুরের আঙারপুর গ্রামের চাষি আনোয়ার খান বলেন, শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে কোনও লাভ নেই। ৮০ আঁটি খড় বিক্রি করে মাত্র ১০০ টাকা পাওয়া যায়। সেই কারণেই চাষিরা হারভেস্টারের দিকে ঝুঁকছেন।


    এদিকে ধান কাটার ক্ষেত্রে হারভেস্টার ব্যবহার হওয়ায় চিন্তা বেড়েছে গো-পালকদের। কান্দি মহকুমা দুগ্ধ সমবায় সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, এলাকায় কয়েক হাজার গো-পালক রয়েছেন। আর গোরুর সারা বছরের খাবার হল খড়। সেই খড় আমন ধানের সময়েই মজুত করে রাখা হয়। কিন্তু হারভেস্টার ব্যবহারে খড় মজুত নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। আবার অনেকে বাইরে থেকেও খড় আমদানি করে থাকেন। 


    খড়গ্রাম থানার খড়সা গ্রামের গোপালক আশিস ঘোষ বলেন, আমার বাড়িতে ২৭টি গোরু রয়েছে। দুধ উৎপাদন আমাদের প্রধান জীবিকা। কিন্তু এবছর যেভাবে হারভেস্টার ব্যবহার হচ্ছে। তাতে ধান ওঠার পরেই খড়ের দর দ্বিগুণ হয়ে যাবে। বড়ঞার বিপ্রশেখর গ্রামের গো-পালক তপন ঘোষ বলেন, যেভাবে হারভেস্টার ব্যবহার হচ্ছে তাতে টাকা দিয়েও খড় পাওয়া সমস্যা হবে। আবার খড়গ্রাম থানার ঝিল্লি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৩০টি গোরুর খাটাল রয়েছে। সেইসূত্রে তাঁদের খড়ের চাহিদাও চরম। খাটাল মালিক হুমায়ুন আলি বলেন, খড়ের জোগানে সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। তবে দর বেড়ে যাবে। দুধের উৎপাদনে খরচও বেড়ে যাবে।  প্রতীকী চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)