বহরমপুরে ৫৬৫০ বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ উদ্ধার, গ্রেপ্তার তিন
বর্তমান | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বহরমপুর থেকে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। ধৃতরা হল বহরমপুরের নগড়াজলের রোহিত শেখ, শহরের শ্যামনগরের দিলীপ ওঁরাও ও জলঙ্গির বাসিন্দা মিঞ্জারুল মণ্ডল। তাদের কাছ থেকে ৫৬৫০ বোতল নিষিদ্ধ সিরাপ উদ্ধার করেছে পুলিস। যার বাজারমূল্য প্রায় ১১ লক্ষ টাকা। একটি চারচাকা গাড়ি, একটি বাইক এবং একটি টোটোও আটক হয়েছে। সেগুলিতে কাশির সিরাপ পাচার করা হতো।
পুলিস জানিয়েছে, নগড়াজলে রোহিতের একটি গোডাউনে এই কাশির সিরাপের বোতল মজুত করে রাখা ছিল। শীতে কুয়াশার আড়ালে এই সিরাপ বাংলাদেশে পাচারের ছক কষেছিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার রাতে পুলিস ওই গোডাউনে অভিযান চালায়। সেখান থেকেই এই অতিরিক্ত কোডাইন মিশ্রিত সিরাপ উদ্ধার রয়েছে। যা বাংলাদেশে মাদক হিসেবে খুব জনপ্রিয়।
বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ বলেন, আমরা ওই গোডাউন থেকে ৫৬৫০ বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ উদ্ধার করেছি। এই সিরাপে অতিরিক্ত কোডাইন মিশ্রিত আছে। বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের শনিবার বহরমপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনায় আর কেউ যুক্ত আছে কিনা জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
একমাসে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ উদ্ধার হয়েছে। বাংলাদেশে মদ পুরোপুরি নিষিদ্ধ হওয়ায় এই সিরাপের চাহিদা রয়েছে। শীত পড়তেই বাংলাদেশে এগুলির জনপ্রিয়তা বাড়ে। পাচারকারীরা নানাভাবে এসব সিরাপ সীমান্তের গ্রামে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এক-একটি বোতল ওপারে পাচার করতে পারলেই ভালো টাকা মেলে। সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের রাস্তায় পুলিস মাঝেমধ্যে নাকা তল্লাশি করে। তাই এই সিরাপ এনে আগে মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুরে মজুত করা হয়েছিল। সুযোগ বুঝে সেগুলি রানিনগর, সাগরপাড়া কিংবা জলঙ্গি সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হতো। তারপর খোলা সীমান্ত দিয়ে ক্যারিয়ার মারফত বাংলাদেশে পাচার করার কথা ছিল। আগে সাধারণত ট্রাক বা মালবাহী গাড়িতে এই সিরাপ মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামে নিয়ে যাওয়া হতো। ইদানীং কৌশল পাল্টাচ্ছে পাচারকারীরা। ঝাড়খণ্ড হয়ে বিলাসবহুল গাড়িতে হাজার হাজার কাশির সিরাপের বোতল ঢুকছে। কখনও একসঙ্গে সেই সিরাপ আনা হচ্ছে না। এক-একটি গাড়িতে লুকিয়ে ৫০০-৬০০ বোতল করে আনা হচ্ছে। তারপর কোনও গোডাউন বা পরিত্যক্ত জায়গায় সেসব মজুত করা হচ্ছে। সুযোগ বুঝে তা বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে পাচারকারীরা।