দিদিকে বলোতে ফোন করে আবাস যোজনার ঘর পেল ১৩টি পরিবার
বর্তমান | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করায় দিয়েছে সাহারা, মিলেছে সুরাহা। আবাস তালিকায় প্রথমে নাম না থাকলেও পড়ে ‘দিদিকে বলো’র নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয় উদ্যোগে আবাস যোজনার ঘর পেয়েছেন ১৩টি পরিবার। শেষ পর্যন্ত আবাস তালিকায় নাম ওঠায় রীতিমতো আবেগে ভাসছেন নবদ্বীপ ব্লকের মহিশুরা পঞ্চায়েতের মাঝেরচরা গ্রামের আনছুর শেখ, আশাবদ্দি শেখ, সাহিনুর বিবি, কুড়ি বিবিরা।
মাঝেরচড়া গ্রামের অধিকাংশ মানুষই দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে দিন যাপন করেন। কেউ পরিযায়ী শ্রমিক, কেউ জনমজুর, কেউ বা হোটেলে কাজ করেন। তাঁদের সকলেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে একচিলতে টিনের চালাযুক্ত কাঁচাবাড়ি। কারও ঘরের দেওয়াল পাটকাঠির, কারও বাঁশের বেড়া, কারও দরমা, কারও বা টিন দিয়ে ঘেরা। বৃষ্টির সময় ছাদ দিয়ে জল পড়ে। ঝড়বৃষ্টির সময় ওই ঘরেতেই পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই চালাতে হয়। পাকা ঘর করার মতো কারও আর্থিক সঙ্গতিও নেই।
জানা গিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দাদের অধিকাংশই সরকারি আবাস যোজনায় ঘরের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সরকারি লোকজন সবকিছু খতিয়ে দেখে গেলেও প্রথম তালিকায় অনেকেরই নাম ছিল না। এরপরই তালিকায় নাম না থাকা গ্রামবাসীরা ‘দিদিকে বলো’ র নির্দিষ্ট নম্বরে যোগাযোগ করেন। সরকারিভাবে আবার সবকিছু খতিয়ে দেখা হয়। এরপরই দিদিকে বলোর দৌলতে কপালে জুটল মাথা গোঁজার ঠাঁই। মহিশুরা পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস তালিকায় সব মিলিয়ে ২৫১জনের নাম রয়েছে। এখন এই পঞ্চায়েত এলাকায় ৮ থেকে ১০টি পরিবারের নাম এখনও আবাস তালিকায় ওঠেনি।
ওই পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের সদস্য আরজু বানু খাতুন বলেন, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে ১৩জনের আবাস তালিকায় নাম উঠেছে। এর জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। অন্যদিকে এই গ্রামের চার পাঁচজনের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তাঁদেরও নাম তালিকায় রয়েছে।
মাঝেরচরা মধ্যপাড়ার বাসিন্দা সাহিনুর বিবি বলেন, একটা ঘরের মধ্যেই থাকতে হয় গোটা পরিবারকে। আবাস তালিকায় নাম ছিল না। এরপর ফোনে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে ঘর পেয়েছি। ওই গ্রামের আর এক বাসিন্দা বৃদ্ধ আনছুর শেখ বলেন, আমি এখন বার্ধক্যজনিত কারণে কাজ করতে পারি না। আমাদের বাড়িটি টিনের। খুবই কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করি। ঘরের তালিকায় নাম ছিল না। তিনমাস আগে মমতা দিদির কাছে ফোন করেছিলাম। ফোন করার চারদিন পরে আমার বাড়িতে সবকিছু খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন অফিসাররা।
মহিশুরা পঞ্চায়েতে সদস্য মহসিন মণ্ডল বলেন, এখনো এমন কিছু গ্রামবাসী আছেন যাঁদের ঘরের প্রয়োজন। তাঁরাও যাতে ঘর পান আমরা সেই চেষ্টাই করছি। আর এক পঞ্চায়েত সদস্য সাহাজুদ্দিন শেখ বলেন, যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে আমরা লিখিতভাবে বিডিওকে তাঁদের নামের তালিকা দিয়েছি। ফের সবকিছু খতিয়ে দেখা হোক। • নিজস্ব চিত্র