সংবাদদাতা, ইটাহার: ইটাহার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ পৌঁছেছিল প্রশাসনের কাছে। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম ঠিকভাবে চালানোর জন্য পরামর্শ দিতে শনিবার প্রধানকে নিজের দপ্তরে ডেকে পাঠান বিডিও। তারপরেই বিডিওর বিরুদ্ধে স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করলেন পঞ্চায়েত প্রধান। বিডিওর বিরুদ্ধে জেলাশাসক, মহকুমা শাসক এবং পুলিসের দ্বারস্থ হবেন বলে জানালেন তিনি। পাল্টা প্রধান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইটাহারের বিডিও দিব্যেন্দু সরকার।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ৬ নম্বর ইটাহার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিলকিস পারভিন। তাঁর স্বামী সাহেরুল হক তৃণমূল নেতা। ব্লক প্রশাসনের অভিযোগ, বিলকিস প্রধান হলেও তাঁর স্বামী কোনও সদস্যকে কিছু না জানিয়ে পঞ্চায়েতে স্বেচ্ছাচার চালাচ্ছিলেন। প্রধান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে সরকারি টাকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠছিল। এছাড়াও প্রধানের স্বামী প্রভাব খাটিয়ে একাধিক দপ্তরের আধিকারিক সহ সাধারণ মানুষকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ হয় বিডিওর কাছে। এবিষয়ে জানতে শনিবার প্রধানকে ডেকে পাঠান বিডিও। কিন্তু প্রধানের পাল্টা অভিযোগ, আর্থিক দুর্নীতিতে মদত দিতে ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়কের সঙ্গে বসে সমঝোতা করার চাপ দিয়েছেন বিডিও। তাঁর কথা না মানলে স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকী বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে গেলে বিডিও মুখ বন্ধ রাখার জন্য চাপ দেন বলেও অভিযোগ করেন প্রধান। বিলকিসের কথায়, পঞ্চায়েতে কোনও দুর্নীতি হয়নি। কিন্তু ঘুরিয়ে আর্থিক দুর্নীতি করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে আমাকে। তাই বিডিওর হুমকির মুখে পড়ে পুলিসের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। কিন্তু থানা অভিযোগ নেয়নি। জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।
প্রধানের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও হাস্যকর বলে দাবি করে বিডিওর মন্তব্য, পঞ্চায়েতে একাধিক আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রধান ও তাঁর স্বামী। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্লক প্রশাসন আইনি পদক্ষেপ নেবে।
ইটাহার পুলিস জানিয়েছে, প্রধান অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। বিডিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে নিয়ম অনুযায়ী জেলা প্রশাসনকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন দলবিরোধী কাজ, দুর্নীতি, বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক ও বাসিন্দাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ উঠছিল সাহেরুলের বিরুদ্ধে। ব্লক তৃণমূল সভাপতি কার্তিক দাস বলেন, সাহেরুলকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে দলের কোনও মাথাব্যথা নেই। নিজস্ব চিত্র