• হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার মহিলা ব্যাঙ্ককর্মীর দেহ, পাশে বিষের শিশি
    বর্তমান | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চেক আউটের সময় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মহিলা গেস্টের কোনও পাত্তা নেই। খোঁজ নিতে সেই রুমে যান হোটেলের এক কর্মী। দীর্ঘক্ষণ দরজা ধাক্কা দেন। তাতেও কোনও সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভাঙতে বাধ্য হয় হোটেল কর্তৃপক্ষ। দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে চিৎ হয়ে পড়ে রয়েছেন মহিলা। মুখ থেকে গ্যাঁজলা বের হচ্ছে। পাশে পড়ে রয়েছে বিষের শিশি।


    শনিবার চেতলা থানা এলাকার একটি হোটেলে এই ঘটনা ঘটে। পুলিস এসে ঘর থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার করে। তারা জানিয়েছে, মৃতার নাম সুমনা পাড়ুয়া মণ্ডল (৩৮)। কসবা থানা এলাকার বাসিন্দা সুমনাদেবী একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন। সাতসকালে এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। হোটেলের কর্মীরাই পুলিসে খবর দেন। পুলিস মহিলাকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা। তবে ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। নেপেথ্যের কী কারণ, নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। 


    পুলিস সূত্রে খবর, কসবার প্রান্তিক পল্লিতে থাকেন সুমনা। বছর সাতেক আগে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামীর নাম রামকৃষ্ণ পাড়ুয়া। শুক্রবারও কর্মস্থলে গিয়েছিলেন সুমনাদেবী। সেখান থেকে বাড়ি না ফিরে সোজা চলে যান আলিপুরের একটি গেস্ট হাউসে। একরাতের জন্য তিনতলার একটি ঘর ভাড়া নেন তিনি। একটি অ্যাপ মারফত ১৫০০ টাকায় ঘর বুক করেন। শনিবার সকাল ১১টায় ঘর ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোটেলের এক কর্মী বলেন, ‘নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ওই ঘরে ফোন করা হয়। কেউ ফোন না ধরলে আমি ডাকতে যাই। দরজা ধাক্কাধাক্কি করি। শেষে দরজা ভাঙা হয়।’ পুলিস ঘটনাস্থল থেকে দু’টি বিষের শিশি বাজেয়াপ্ত করেছে। একটি খোলা ও অন্যটি সিলবন্ধ অবস্থায় ছিল। মৃতার স্বামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিস। সারা রাত স্ত্রী বাড়িতে না ফিরলেও কেন পুলিসকে তা জানাননি তিনি, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। পুলিস সূত্রে খবর, পারিবারিক অশান্তিতে ভুগছিলেন সুমনাদেবী। সেই কারণেই কি আত্মহত্যা? উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)