সংবাদদাতা, তেহট্ট: শনিবার থেকে তেহট্টে শুরু হল একমাস ধরে ছিন্নমস্তার মেলা। রবিবার রাতে উঠোন ষষ্টির দিন ছিন্নমস্তাদেবীকে ভিটেয় তোলা হয়। তারপরে একমাস ধরে পূজো হয়। এই একমাস এলাকায় বিশাল মেলা বসে। এই দেবীর পুজো নিয়ে এলাকার মানুষের কাছে বিভিন্ন অলৌকিক কথা শোনা যায়। শুক্রবার রাতে এই পুজোর শুভ সুচনা করেন বিধায়ক তাপস সাহা। উপস্থিত ছিলেন তেহট্ট-১ বিডিও সঞ্জীব সেন, তেহট্ট থানার আইসি অভিজিৎ বিশ্বাস সহ অন্যান্যরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পুজো আগে হতো বাংলাদেশের দরিয়াপুরে। সেখানে মা কালী রূপে দেবীর পুজো হতো। একদিন রাতে মা কালীর মাথা কেউ কেটে দেয়। পরের দিন সকালে ওই মন্দিরের পুরোহিত মন্দিরে গিয়ে দেখেন যে দেবীর মাথা নেই। তিনি তাই দেখে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। সেই রাতে মা কালী তাঁকে স্বপ্নাদেশে বলেন, আমাকে ছিন্নমস্তা রূপে পুজো করতে হবে। পুজো পদ্ধতি নিয়েও মা আদেশ দেন। উত্তরপ্রদেশের কাশী থেকে তালপাতার পুঁথি নিয়ে এসে সেই পুঁথি অনুসারে পুজো করতে হবে। এরপরেই কাশী থেকে সেই তালপাতার পুঁথি নিয়ে এসে সেই নিয়মে পুজো শুরু হয়। এখনও সেভাবেই পুজো হয়। দেশভাগের সময় দরিয়াপুর থেকে বেশ কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তেহট্টের গরিবপুরে চলে আসেন। তাঁরা এদেশে আসার সময় সেখানকার ছিন্নমস্তা মন্দিরের মাটি ও তালপাতার পুঁথি নিয়ে আসেন। সেই মাটি দিয়ে বর্তমান মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। সেই থেকে এখান একই নিয়মে পূজিত হন ছিন্নমস্তা। সারা বছর এই মন্দির দেখাশোনা করেন এলাকার বৃদ্ধা শুভঙ্গবালা ঘোষ। এই মেলা কমিটির সম্পাদক নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ ঘোষ বলেন, এখানে পুজো দেশভাগের পর থেকে হচ্ছে। আগে বাংলাদেশের দরিয়াপুরে এই পুজো হত। এই পুজোতে এখানে মেলা বসে। একমাস ধরে এই মেলা চলবে। এই পুজোতে অনেক মানুষ আসেন। পাঁঠা বলি হয় শনি মঙ্গলবার। পুজো দেখতে অনেক মানুষ আসেন বলে মেল প্রাঙ্গণে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। • নিজস্ব চিত্র