চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: সমবায় ভোটে বোমাবাজির ঘটনা ঘটল নন্দীগ্রামে। ভোটারদের ভয় দেখিয়ে ছত্রভঙ্গ করার এই ঘটনায় পাঁচজন জখম হয়েছেন। রবিবার দুপুরে তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যাণ্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম শাখার এই ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছিল স্থানীয় কাঞ্চননগর হাইস্কুল। সেখানেই বোমাবাজির ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। জখমদের স্থানীয় নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় বিজেপি এবং তৃণমূল একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে।
তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যাণ্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক লিমিটেডের নন্দীগ্রাম শাখায় ভোটের আগেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে ক্যাম্প গড়ার ঘটনা ঘিরে বিজেপি এবং তৃণমূলের অভিযোগ গড়িয়েছে হাই কোর্ট পর্যন্ত। শেষমেশ হাই কোর্টের নির্দেশে ১৪৪ ধারা জারি হয় এলাকায়। এখানে ৭টি আসন। মোট ভোটার ৫ হাজার ৯২১ জন। তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম তিনটি রাজনৈতিক দলের তরফে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
ভোটের দিন বোমাবাজির ঘটনায় উত্তেজনার পারদ চড়েছে আরও বেশি। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে ঘটেছে বোমাবাজি। পর পর তিনটি বোমা ফাটানোর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। যদিও কতগুলি বোমা ফেটেছে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়ে বিজেপির তমলুক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মেঘনাথ পাল জানিয়েছেন, “সমবায় ভোটে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে তৃণমূল জয়ী হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনভাবেই সম্ভব হবে না। বিজেপি জিতবে নন্দীগ্রামে।”
যদিও বিজেপি নেতার সেই যুক্তিকে উড়িয়ে দিয়েছেন নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ। তিনি বলেন, “প্রাক্তন সাংসদ, বর্তমান বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই বোমাবাজি ঘটেছে। তার মানে এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, দিব্যেন্দু অধিকারী বহিরাগতদের নিয়ে এসে এখানে বোমা ফাটিয়েছেন। আমাদের চারজন কর্মীকে জখম করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে নন্দীগ্রামে। তা ঠেকাতেই সামান্য সমবায় ভোটে তারা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে বোমাবাজি করছে। তার জবাব দেবেন নন্দীগ্রামের মানুষ।”
বোমাবাজির ঘটনায় সিপিএম, বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধে একে অপরে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। সিপিএমের নন্দীগ্রাম এরিয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহাদেব ভূঁইয়া জানিয়েছেন,”আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করেছিলাম। কিন্তু ওরা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ভোটারদের কাছ থেকে কুপন কেড়ে নিয়ে বহু ভোটারকে ভোট দিতে দেয়নি । বিজেপি এবং তৃণমূল ভয়ের পরিবেশ তৈরির পিছনে রয়েছে। পুলিশ প্রশাসন নীরব দর্শকমাত্র।” নন্দীগ্রাম থানার আইসি অনুপম মণ্ডল বোমাবাজির ঘটনা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন,”বোমাবাজির আওয়াজ পেয়েছি। বাকি খোঁজখবর নিচ্ছি।” তবে এদিন এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সন্ধে পর্যন্ত কোনও পক্ষের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।