হাওড়ার আব্দুর রহমান এবং সোমাইয়া খাতুনের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। দুই বাড়িই তাঁদের সম্পর্কের কথা জানত। কিন্তু সম্প্রতি নাকি আব্দুর এবং সোমাইয়ার বনিবনা হচ্ছিল না। তার মধ্যে শনিবার রাতে প্রেমিককে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠান সোমাইয়া। যথা সময়ে প্রেমিকার বাড়িতে হাজির হন আব্দুর। দু’জনে বেশ কিছু ক্ষণ কথাবার্তা বলেন। গল্প করতে করতে প্রেমিককে বাড়ির কাছে বাগানে নিয়ে যান প্রেমিকা। সেখানে আদরের ছলে একটি গাছে আব্দুরের হাত-পা বেঁধে দেন। চোখও বেঁধে দেন। তার পর ধারালো অস্ত্র বার করে তাঁর যৌনাঙ্গে কোপ বসান তরুণী। ডোমজুড় থানার পুলিশের হাতে ধৃত ওই তরুণীর দাবি, পরিকল্পনা করেই এই কাজ করেছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমাইয়া জানিয়েছেন, ২০১৮ সাল থেকে আব্দুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। তবে সম্প্রতি সম্পর্কে চিড় ধরেছিল সেই সম্পর্কে। কারণ কী? তরুণীর দাবি, আব্দুর তাঁকে ভালবাসেননি। বিয়েও করতে চাননি। শুধু ‘ভোগ করতে চেয়েছিলেন’। বাধা দেওয়ায় শুরু হয়েছিল ব্ল্যাকমেল। কী রকম ব্ল্যাকমেল?
ধৃত সোমাইয়ার দাবি, তাঁদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের বেশ কিছু ছবি তুলে রেখেছিলেন প্রেমিক। সেগুলো ‘ফাঁস’ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হতেন। প্রেমিক তাঁকে বিয়ে করবেন না জেনেও তিনি তাঁকে ছাড়তে পারেননি। কারণ, আব্দুরকে তিনি সত্যিকারের ভালবেসেছেন। তরুণী আরও জানান, বেশ কয়েক বার তিনি সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ার কথা ভেবেও শেষ মুহূর্তে নিজের কাছে হেরে গিয়েছেন। ২০২১ সালে এক বার প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু আব্দুরকে তিনি ভুলে যেতে পারেননি। আবার প্রেমিকের ‘অভিসন্ধি’ও মানতে পারেননি। তাই অনলাইনে একটি ধারালো ছুরির অর্ডার করেছিলেন। খরচ হয়েছিল ১৮০ টাকা।
কী ঘটেছিল শনিবার রাতে?
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী জানিয়েছেন, তাঁকে বিয়ে না করার ‘শাস্তি’ দেওয়ার জন্য শনিবার রাতে আব্দুরকে বাড়িতে ডাকেন। প্রেমিক এলে তাঁকে নিয়ে বাড়ির অদূরে বাগানে নিয়ে যান। প্রেমিককে বলেছিলেন, তাঁকে অন্য ভাবে আনন্দ দেবেন। তার পর বাগানের একটি গাছে প্রেমিকের হাতে বেঁধে দেন। ওড়না দিয়ে তাঁর চোখও বেঁধে দেন। আদরের ছল করে অনলাইনে কেনা ছুরি বার করেই আব্দুরের পুরুষাঙ্গে আঘাত করেন তিনি।
ধৃত তরুণীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা শুরু হয়েছে। রবিবারই তাকে হাজির করানো হয় হাওড়া আদালতে।