আবাসে একই পরিবারের ১২ জনের নাম? প্রশ্ন তুলতেই সিটু নেতাকে মার, গ্রামে জ্বলল আগুন
এই সময় | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
আবাস যোজনার তালিকায় একই পরিবারের ১২ জনের নাম। প্রতিবাদ করায় এক যুবককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল। শুধু তাই নয়, এলাকার একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মালদার মানিকচক বিধানসভা এলাকার ভুতনি থানার দক্ষিণ চণ্ডীপুরে ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, সেখানেই আবাসের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বেধড়ক মারধর করা হয় দানেশ আলি নামে এক যুবককে। দানেশ সিটুর জেলা কমিটির সদস্য। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। পাল্টা মালদা তৃণমূল কংগ্রেসের-সহ সভাপতি বাবলা সরকারের দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আর তৃণমূল করলে কেউ ঘরের জন্য আবেদন করতে পারবেন না, এমন নিয়মও কোথাও লেখা নেই।
সাহেব হক নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, রবিবার দানেশ বাড়ি থেকে বের হতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা আবির আলির পরিবারের লোকজন দানেশকে চেপে ধরে কোপাতে শুরু করে। রক্তে ভেসে যায় সারা শরীর। সাহেবের দাবি, গরিবদের জন্য ঘর। অথচ যোগ্যরা ঘর পাবে না, তা নিয়েই প্রতিবাদ করায় ছেলেটাকে এই ভাবে মেরেছে।
এ দিন সকাল থেকেই দফায় দফায় সিপিএম ও তৃণমূলের কর্মীরা সংঘর্ষে জড়ায় বলে অভিযোগ। ইট পাটকেল নিয়ে চলে দুপক্ষের মারামারি। দু’পক্ষেরই একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় মোটর বাইক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
সিটুর রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কালাম শেখের অভিযোগ, ২০-২৫ দিন আগে আবাস যোজনার একটি খসড়া তালিকায় এলাকার ১২ জনের নাম আসে। সকলেই তৃণমূল করেন। বাড়িঘরও পাকা। কালাম শেখের কথায়, ‘এ নিয়ে বিডিও অফিস, ডিএম অফিসে অভিযোগও জানানো হয়। এর মধ্যে রবিবার সকালে তৃণমূল নেতা আবির আলি, সাইন আলি-সহ প্রায় ২৫ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে দানেশের উপর হামলা চালায়। অবস্থা খুবই খারাপ।’ মালদা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে দানেশকে। অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি।
মালদা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি বাবলা সরকারের বক্তব্য, ‘এটা অন্য গোলমাল। তৃণমূলের নাম জড়ানো হলে সেটা একেবারেই মিথ্যা। আমাদের সরকারের নীতি সকলের জন্য এক। কারও যদি বাড়ি থাকে সে আবাসের ঘর পাবে না। তবে কোনও তৃণমূলের লোক যদি দুঃস্থ হন, তিনি আবাসের ঘর পাবেন না, এটা কেমন কথা? মানিকচকে কংগ্রেস ও সিপিএম এক সঙ্গে ভোটে লড়ার পর থেকেই নানা ভাবে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছে।’ ভুতনি থানার ওসি পবিত্র মাহাতো জানান, ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ টহল চলছে এলাকায়। সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।