• ‘হিন্দুদের উপর বাড়ছে নির্যাতন, কিছু একটা করুক ভারত সরকার’
    বর্তমান | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বনগাঁ: পারতপক্ষে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। সাংবাদিক পরিচয় শুনে আরও গুটিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের। কোথা থেকে এসেছেন, কীসের জন্য এসেছেন—এরকম নানা প্রশ্নে জোরাজুরি করলে শুধু জানাচ্ছেন, ‘ওই দেশ’! বাংলাদেশে হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা কি বাড়ছে? কতটা নিরাপদ আপনারা? প্রশ্ন শুনেই চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ যেন আরও গভীর হল। নাম-ঠিকানা গোপন থাকবে আশ্বাস পেয়ে একজন মুখ খুললেন। তাঁর কাতর আর্তি, ‘আপনারা তো সাংবাদিক। আপনার দেশের সরকারকে বলুন না আমাদের আশ্রয় দিতে। আমরা এদেশেই চলে আসতে চাই। বেঁচে থাকতে চাই।’ কথাগুলি বলতে গিয়ে গলা ধরে এল যশোরের বাসিন্দা ওই মাঝবয়সি ব্যক্তির। কিছুটা সামলে নিয়ে তিনি আরও বললেন, ‘একবার ভারত সরকার বাংলাদেশের হিন্দুদের আশ্রয় দেওয়ার কথা ঘোষণা করুক। দেখবেন, জনস্রোত শুরু হয়ে যাবে।’


    দিন যত এগচ্ছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েইে চলেছে। একের পর এক মন্দিরে আগুন দেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় বেরলে হিন্দুদের উদ্দেশে নানা কটূক্তি ভেসে আসছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হিন্দুরা অনেকেই দেশ ছাড়তে চাইছেন বলে দাবি নানা প্রয়োজনে ভারতে আসা বাংলাদেশিদের একাংশের। ভারতের ভিসা পেতে সমস্যা হওয়ায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে হিন্দুদের মধ্যে। বরিশালের প্রবীণ বাসিন্দা সদানন্দ বালা (নাম পরিবর্তিত) দমদমে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাবেন বলে রবিবার পেট্রাপোল সীমান্তে এসেছেন। তিনি বলেন, ’৭১-এর কিছু স্মৃতি এখনও মনে আছে। তবে এখন যা হচ্ছে,  তা ৭১-কেও ছাপিয়ে যাবে। মৌলবাদীরা বাংলাদেশে হিন্দুদের থাকতে দেবে না।’ অনেক আগেই ভারতে আসার ভিসা নেওয়া ছিল যশোরের আরেক বাসিন্দা শ্যামলকুমার ঘোষের (নাম পরিবর্তিত)। ভারতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য তিনিও এদিন পেট্রাপোল সীমান্তে এসেছিলেন। সরোজবাবু বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুরা ভালো নেই। খবরে যা দেখাচ্ছে, অবস্থা তার চেয়েও ভয়ঙ্কর। হিন্দুদের উপর নির্যাতনের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। ভারত সরকার কিছু একটা করুক।  নাহলে আমরা বাঁচব না।’
  • Link to this news (বর্তমান)