• দেউচা-পাচামির খনির জন্য জমি দিয়েও চাকরি পাননি, কেষ্টর কাছে নালিশ পঁচিশ জমিদাতার
    আনন্দবাজার | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • দেউচা-পাচামিতে কয়লা খনির জন্য জমি দিয়েও প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি মিলছে না। এই অভিযোগ নিয়ে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দ্বারস্থ হলেন এলাকার তৃণমূল নেতা, জমিদাতা-সহ প্রায় ২৫ জন। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জন্যই অসুবিধায় পড়েছেন। জমি দিয়েছেন এক জন। অথচ চাকরি পাচ্ছেন অন্য জন। সোমবার বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করে সমস্ত অভিযোগ জানানোর পরে অভিযোগকারীরা বলেন, ‘‘মহম্মদবাজার ব্লকের ভূমি আধিকারিক-সহ অন্যান্য আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলাম সকলে। উনি (অনুব্রত) ১০ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্য দিকে, অনুব্রতও জানান, অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে তিনি শীঘ্রই আলোচনা করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘দু’বছর ছিলাম না। কী হয়েছে জানতাম না।’’

    বীরভূমের দেউচা-পাচামিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলা মুখ কয়লা খনি হতে চলেছে। এশিয়ার বৃহত্তম। যদিও সেই কাজ এখনও বাকি। জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগে। জমিদাতাদের জন্য আর্থিক প্যাকেজ-সহ চাকরি দেওয়া কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন তিনি। সেখানেও বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে দেউচা-পাচামির কয়লা খনির জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। অন্য দিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে ৫০০০ হাজার জমিদাতার চাকরি পাওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৪০০ জন চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েছেন। বাকিরা এখনও নিয়োগপত্র পাননি। আবার কয়েক জনের অভিযোগ, যাঁরা জমিদাতা নন, তাঁদের অনেকে চাকরি পেয়েছেন। অনুব্রতের কাছে অভিযোগ জানাতে আসা এমনই এক জন বলেন, ‘‘যাদের অল্প জমি আছে বা পাট্টা জমি আছে, তাদের জমি সরকার অধিগ্রহণ করলেও পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে না। বহু বাইরের লোককে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে। বৈধ জমিদাতারা বঞ্চনার শিকার।’’ কয়েকজন আদিবাসী মানুষও তাঁদের পাট্টার কাগজপত্র নিয়ে অনুব্রতের কাছে গিয়েছিলেন।

    গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রায় দু’বছর জেলে ছিলেন অনুব্রত। তাঁর দাবি, ওই সময়ে কে চাকরি পেয়েছেন, তাঁর কাছে খবর নেই। তবে তাঁর কাছে দুর্নীতিরও অভিযোগ করেননি কেউ। অসুবিধার কথা বলেছেন। কেষ্টর কথায়, ‘‘আমি থাকাকালীন ১৫০০ লোকের চাকরি হয়েছে। তার পরে আর কেউ চাকরি পায়নি বলে অভিযোগ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দেউচা-পাচামির কিছু লোকজন এসেছিলেন। ওখানকার ব্লক প্রেসিডেন্টও এসেছিলেন। ওঁরা বলেছিলেন ডেপুটেশন দেবেন বিএলআরও-কে। কিন্তু আমি তো কিছুই জানি না। দু’বছর এখানে ছিলাম না। ওঁদের অভিযোগ শুনলাম। জমির পাট্টা-কাগজপত্র নিয়ে এসেছিলেন সবাই। সে সব দেখেছি। আমি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)