কেতুগ্রামে শ্রমিকের মৃত্যুতে রেল ও বিদ্যুৎ দপ্তরের চাপানউতোর
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, কাটোয়া: বিদ্যুৎ দপ্তরের নিষেধ সত্ত্বেও কেতুগ্রামের কোমরপুর স্টেশনের কাছে তড়িঘড়ি আণ্ডারপাস তৈরির কাজ সারছিল ঠিকাদার সংস্থা। প্রস্তাবিত জায়গা থেকে বেশকিছুটা দূরে অপরিকল্পিতভাবে কাজ করতে গিয়েই মাটি ধসে পড়েছে। যার ফলে পূর্বস্থলীর পূর্ব আটপাড়া গ্রামের আশুতোষ মণ্ডল নামে এক ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে রেল ও বিদ্যুৎ দপ্তরের চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সোমবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, কাজটা করাতে আমরা এক ঠিকা সংস্থাকে বরাত দিয়েছিলাম। সেখানে মাটি চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা বিভাগীয় তদন্ত করব।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে কেতুগ্রাম-১ ব্লকের কোমরপুর স্টেশনে আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ চলছিল। আচমকা মাটি ধসে ওই ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে। দু’জন জখম হন। জেসিবি দিয়ে মাটি সরিয়ে উদ্ধার করতে হয় শ্রমিকদের।
রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, কোমরপুর স্টেশনের কাছে প্রস্তাবিত ‘সেফটি জোন’ থেকে ৬৫ ফুট দূরে ঠিকাদার সংস্থা কাজ করছিল। কেন প্রস্তাবিত এলাকা থেকে আচমকা রাতারাতি সরে গিয়ে কাজ হচ্ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে ঠিকা সংস্থার কর্মী জুলফিকার শেখ বলেন, আমরা বিদ্যুৎ দপ্তরকে বারবার জানানো সত্ত্বেও তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি। তারা বিদ্যুতের কেবল সরায়নি। ফলে আমরা কিছুটা দূরে কাজ করছিলাম। আর তখনই এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কাটোয়া ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রাহুল আগরওয়াল বলেন, মাটির নীচের কেবল সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা রেলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারকে ২৫ জুলাই ২৮ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫০২ টাকা কোটেশন হিসেবে জমা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা এখনও পর্যন্ত সেই টাকা জমা করেনি। তারা আমাদের না জানিয়েই মাটি খোঁড়ার ফলে বেশ কয়েকটি তার কেটে গিয়েছে। আমরা রেলকে এরজন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে চিঠি দেব।
প্রশ্ন উঠছে, তড়িঘড়ি প্রস্তাবিত এলাকার বাইরে আন্ডারপাস করার সময়ে ঠিকাদার সংস্থা নিরাপত্তার জন্য আগাম ব্যবস্থা নেয়নি কেন? বিদ্যুতের তারের জন্য অনেক শ্রমিক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যেতে পারত। কেতুগ্রামের কোমরপুরে রেলের আণ্ডারপাস তৈরি করতে গিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে।-নিজস্ব চিত্র