• ডিসেম্বরের মধ্যেই গঙ্গাজলঘাটি ও মেজিয়ায় পানীয় জল প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশ
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: চার বছর আগে শুরু হয়েছিল প্রকল্পের কাজ। তারপর করোনা সহ নানা কারণে বারবার কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। তার ফলে নির্দিষ্ট সময়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের(পিএইচই) মেজিয়া-গঙ্গাজলঘাটি প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়নি। এখনও ওই দুই ব্লকের ৭০ হাজার বাড়িতে আর্সেনিক ও ফ্লুরাইড মুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া যায়নি। জলের জন্য রুখাশুখা দু’টি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের কার্যত ‘চাতকের’ মতো অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ওই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করার ব্যাপারে পিএইচই কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দিয়েছেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন। সম্প্রতি পিএইচই-র ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকদের নিয়ে জেলাশাসক ওই প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে কাজ শেষ করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। 


    জেলাশাসক বলেন, গরমের মরশুম শুরু হওয়ার আগেই যাতে মেজিয়া ও গঙ্গাজলঘাটি ব্লক এলাকার বাসিন্দারা পরিস্রুত পানীয় জল পান তার জন্য পিএইচইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আমি স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 


    জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, কাজ শেষ করার ব্যাপারে জেলাশাসকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। তারপর ধাপে ধাপে তা ‘কমিশনিং’ করা হবে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে যাবে বলে আমরা আশা করছি। করোনা ও দু’টি গ্রামে স্থানীয়দের বাধাদানের কারণে প্রকল্পের পাইপ পাতার কাজ বেশ কিছুদিন ধরে থমকে ছিল। সেই কারণে কাজ শেষ করতে সময় লাগছে। তবে আমরা প্রকল্প অনেকটাই গুটিয়ে ফেলেছি। তা সম্পূর্ণ করতে আর সমস্যা হবে না। 


    প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পিএইচই-র মেজিয়া-গঙ্গাজলঘাটি জল প্রকল্পের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি) টাকা দিচ্ছে। প্রকল্পের জন্য মোট ৪০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বড়জোড়া প্রকল্পের মতো এক্ষেত্রেও দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল উত্তোলন করা হবে। তারজন্য ব্যারেজে ‘ইনটেক প্ল্যান্ট’ করা হয়েছে। সেই জল গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের বাসুদেবপুরের ‘ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে’ শোধনের পর বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হবে। ওই প্রকল্পের পানীয় জল ওই দুই ব্লকের ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪০টি মৌজায় পৌঁছে দেওয়া হবে। ৭০ হাজার পরিবার পরিস্রুত পানীয় জল পাবে। দৈনিক মাথাপিছু ৫৫ লিটার হিসেবে পরিবারগুলিকে জল দেওয়া হবে। গড়ে প্রতি পরিবারে পাঁচজন করে সদস্য রয়েছে ধরে জল সরবরাহ করা হবে।


    জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ২০২০ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তারপর করোনার প্রকোপ শুরু হয়। দফায় দফায় লকডাউনের জেরে প্রকল্পের কাজে বিঘ্ন ঘটে। মাঝে পিংরুই ও মেটালি গ্রামে রাস্তা কাটা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কাজ থমকে ছিল। জেলা প্রশাসন সমস্যা মেটাতে আমাদের সাহায্য করে। সম্প্রতি কাজে গতি এসেছে। আমরাও দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাইছি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)