সংবাদদাতা, বনগাঁ: বাংলাদেশ নাকি চাইলে চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল করে নেবে! এমনকী, আমেরিকা দখল করে নেওয়াও কোনও ব্যাপার নয় তাদের কাছে! প্রতিবেশী দেশের এক প্রাক্তন সেনা আধিকারিকের এমন আজগুবি দাবিতে ব্যাপক হাস্যরসের উদ্রেক হয়েছে এপারে। উগ্রতা আর একবগ্গা ভারত-বিদ্বেষের হাওয়ায় ভেসে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রবীণ সেনা কর্তারাও যেভাবে ণত্ব-ষত্ব জ্ঞান হারাচ্ছেন, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে। হাস্যরসাত্মক মিমের ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আপাতত চায়ের ঠেক থেকে নেটপাড়ার আড্ডার অন্যতম বিষয় এই ‘হুমকি’। ফেসবুক, ট্যুইটারের বিভিন্ন পোস্টে ঘুরে ফিরে আসছে ‘কলকাতা দখল’ প্রসঙ্গ। যেমন, এক নেট-নাগরিক ব্যাঙ্গের সুরে লিখেছেন, ‘এবার থেকে কি তাহলে কলকাতা যেতে পাসপোর্ট লাগবে?’ বাংলাদেশিদের একাংশের ধমক-চমককে তীব্র কটাক্ষ করে এক জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘আগে তো বনগাঁ লোকালের একটা সিট দখল করে দেখাক বাংলাদেশ। তারপর তো কলকাতা!’
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ বেড়েছে। কয়েকদিন আগে সেখানকার এক হিন্দু ধর্মীয় নেতাকে গ্রেপ্তারের পর পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। ক্রমবর্ধমান সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারত-বিদ্বেষ। বাস্তবের সঙ্গে সম্পর্কহীন নানা পরিকল্পনার কথা শুনিয়ে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী অংশকে তোল্লাই দেওয়া চলছে। এই আবহে ক’দিন আগে বাংলাদেশের ওই প্রাক্তন সেনাকর্তার ‘কলকাতা দখল’ সংক্রান্ত হুমকি ভাইরাল হয়। তারপর এপার বাংলার ট্রেনে, বাসে, অফিসে এটাই হয়ে উঠেছে মুখরোচক চর্চার অন্যতম বিষয়।
বিশাল একটি গাছের গুঁড়ি একটি ট্রাকের উপর রেখে সেটিকে ‘বাংলাদেশের শক্তিশালী মিসাইল’ বলে ঠাট্টা চলছে নেটপাড়ায়। নানা ধরনের মজার মিম ছড়িয়ে পড়ছে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপেও। কেউ লিখছেন, ‘এদেশ থেকে নূন না গেলে যারা পান্তা নিয়ে বসে থাকে, তাদের আবার বড় বড় কথা।’ কেউ আবার বাঁশের তৈরি ‘যুদ্ধজাহাজ’- আবিষ্কারের ‘কৃতিত্ব’ দিচ্ছে বাংলাদেশকে! ফুড ব্লগারদের সৌজন্যে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া শিয়ালদহের রাজুদা’র পরোটার দোকানে যত ভিড় হয়, তা বাংলাদেশের সেনার চেয়ে বেশি বলে তীব্র ব্যঙ্গ করছেন অনেকে। রসনাপ্রিয় এক পশ্চিমবঙ্গবাসী অবশ্য এই ডামাডোলের মধ্যেও পদ্মার ইলিশের কথা ভোলেননি। তাঁর কাতর আর্জি, ‘কলকাতা দখল করতে আসার সময় হাতে করে কয়েকটা প্রমাণ সাইজের ইলিশ আনবেন। তাহলেই হবে!’