• মমতার লাইভ স্ট্রিমিং ও একাধিক টোটকায় বাজিমাত, এমডি-এমএস পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: অভয়া কাণ্ডের পর মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানাতে গঠন করেন গ্রিভান্স সেল। তার নির্দেশনামা বেরতে না বেরতেই অভিযোগের বন্যা বইতে শুরু করে। যেসব বিষয়ে ফোন, ই-মেলে অভিযোগ  সবচেয়ে বেশি আসে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মেডিক্যাল পরীক্ষাব্যবস্থা। তারপর দফায় দফায় স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে এই ব্যবস্থায় সংস্কার করার চেষ্ট করে গ্রিভান্স সেল। সরকারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দুর্নীতি দমনের অন্যতম টোটকা ছিল পরীক্ষার ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ করা। ছিল নতুন আরও কয়েকটি কড়া পন্থা। আর তাতে ম্যাজিকের মতো কাজ হল সদ্য সমাপ্ত এমডি-এমএস ফাইনালের থিয়োরি পরীক্ষায়। পরীক্ষা শুরু হয় ২ ডিসেম্বর। শেষ হল এদিন, সোমবার। সাতদিনে পরীক্ষা হল মোট চারটি। এদিন বিকেল পর্যন্ত প্রশ্নপত্র ফাঁস, টোকাটুকি, সিসিটিভি বন্ধ করে প্রহসনে পরিণত করাসহ কোনও ধরনের অভিযোগই জমা পড়েনি। ছাত্রছাত্রী, পরিদর্শক কলেজ কর্তৃপক্ষ—নয়া পরীক্ষা ব্যবস্থায় নয়া সংস্কারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। এমনকী স্বাস্থ্যদপ্তরকে কটাক্ষ যাঁদের রোজনামচা, সেই বামপন্থী চিকিৎসক সংগঠনের নেতারাও নয়া সংস্কারের গুণ গাইছেন! 


    বামপন্থী চিকিৎসক সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স-এর অন্যতম শীর্ষ নেতা ডাঃ মানস গুমটা নিজেই ছিলেন আর জি কর-এর এই পরীক্ষার পরিদর্শক। তিনি বলেন, যেটুকু জেনেছি এবং দেখেছি, এবারের পরীক্ষা যথেষ্ট স্বচ্ছ হয়েছে। সংস্কারগুলি কাজে এসেছে। নতুন নিয়ম বলবৎ করার ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীরা সর্বতোভাবে সহযোগিতা করেছেন। কী বলছেন ছাত্রছাত্রীরা? পিজি হাসপাতালে ফাইনাল ইয়ারের এক পিজিটি বলেন, এমবিবিএস থেকে পরপর ডাক্তারি পরীক্ষা দিয়ে আসছি। এমন আদর্শ পরীক্ষা আগে দেখিনি। হলে ঢোকার আগে তল্লাশি থেকে শুরু করে আসন বিন্যাস সব ব্যাপারেই চূড়ান্ত কড়াকড়ি ছিল। প্রশ্নপত্রও গত ১০ বছরের মধ্যে ছিল সবচেয়ে জটিল, কিছুটা কঠিনই বলা চলে। রঙিন জলের বোতল, ফাইল কভার পর্যন্ত সঙ্গে নিতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে একঘণ্টা আগে পরীক্ষার হলে পৌঁছনোর করেণে কিছুটা সময় নষ্ট হল। খানাতল্লাশির জন্য কর্মিবল বাড়িয়ে, এই সময়টা আধ ঘণ্টা কমানো যেতেই পারে। কী বলছেন শিক্ষক চিকিৎসকরা? রাজ্যের যে-ক’টি মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা নিয়ে চরম অনিয়ম চলার অভিযোগ অতীতে উঠেছে, তার উল্লেখযোগ্য হল বর্ধমান। এবার সেই কলেজ থেকেও কোনও অভিযোগ মেলেনি। এখানকার অ্যানাসথেসিয়া বিভাগের প্রধান ডাঃ সুমন্ত ঘোষ মৌলিক বলেন, এবার অভাবনীয় ভালো পরীক্ষা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা খুবই সহযোগিতা করেছেন। লাইভ স্ট্রিমিং, ফ্রিসকিং থেকে উত্তরপত্রে ডিজিটাল লক—রাজ্যের কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা এত বিজ্ঞানসম্মতভাবে আগে কখনও হয়নি। এতে আমরা সন্তুষ্ট।
  • Link to this news (বর্তমান)