• বোর্ড লাগিয়ে জলাশয় তত্ত্বাবধানে নিলেও জবরদখল চলছেই! ঠুঁটো জগন্নাথ পুরসভা
    বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: জলাশয়ের মালিকানা নির্ধারণ হয়নি। তাই বোর্ড লাগিয়ে জায়গাটি তত্ত্বাবধানে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে পুরসভা। অথচ, দিনের পর দিন ওই জলাশয় দখল হলেও পুরসভার মুখে কুলুপ। বরানগর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সতীন সেন পল্লি লাগোয়া এলাকার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠুঁটো জগন্নাথের ভূমিকা পালন করছে পুরসভা। প্রভাবশালীদের মদতে গত কয়েক বছরে জলাশয় ভরিয়ে নতুন নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে। যদিও, পুরসভার তরফে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।


    বরানগর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গা ঘেঁষে গিয়েছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। নিরঞ্জন সেন নগর বাসস্টপ থেকে নেমে এক্সপ্রেসওয়ের ধার ধরে সরাসরি ডানলপ বাজারে যাওয়া যায়। এই রাস্তার পাশে পরপর কয়েক বিঘার বিশাল জলাশয় রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এই জলাশয়টি বেসরকারি মালিকানাধীন। বাম জমানা থেকে জলাশয়ের একাংশ দখল করে বহু কলোনি গজিয়ে উঠেছে। বর্তমানে সেই জবরদখল ক্রমশ বাড়ছে। তিনটি জলাশয় কচুরিপানা, ঘাস ও জঞ্জালে পরিপূর্ণ। স্থানীয়দের কাছে ওইসব পুকুর কার্যত খোলা ডাস্টবিন। বিশালাকার জলাশয়গুলিতে জল খুঁজতে হবে দূরবিন দিয়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় সুকান্ত পার্ক, সর্বহারা, কালীমাতা সহ অন্যান্য কলোনির পুকুর পাড় লাগোয়া বাড়ি ক্রমশ পুকুর ভরাট করে এগিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ। অর্থের বিনিময়ে এই জবরদখলে মদত দেওয়া হচ্ছে। এই জায়গা মশার আঁতুড়ঘর। ডেঙ্গু মরশুমে স্থানীয়দের সীমাহীন যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। কয়েক মাস আগে পুরসভা ওই পুকুরগুলির পাড়ে একাধিক বোর্ড লাগিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘এই জলাশয়টির মালিকানা নির্ধারণ করা যায়নি। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে বর্তমানে জলাশয়টি বরানগর পুরসভার তত্ত্বাবধানে নেওয়া হল। নির্দেশানুসারে পুরপ্রধান, বরানগর পুরসভা।’ স্বাস্থ্য ও সাফাই সংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নম্বরও দেওয়া রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুরসভা বোর্ড লাগিয়ে জলাশয়টি নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেওয়ার কথা বললেও নিয়মিত জলাশয় পরিষ্কার কিংবা জবরদখল রুখতে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অবাধে জলাশয় ভরাট করে দখল চলছে। পুরসভার ঘুম কবে ভাঙবে তা নিয়ে সরব হয়েছেন শহরবাসী। 


    পুরসভার চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিক বলেন, যেসব জমি ও পুকুরে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা ও নোংরা পড়ে রয়েছে অথচ মালিকদের পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে এই ধরনের বোর্ড লাগানো হয়েছে। এখানেও জমি মালিকদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। জায়গাটি জবরদখল হচ্ছে কি না, পুকুর ভরাট হচ্ছে কি না, বিষয়টি আমার জানা নেই। রেকর্ডে ওই জায়গা পুকুর নাকি ডাঙা তাও জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)