কয়লা পাচার মামলায় সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটে মোট ৫০ জনের নাম ছিল। কিন্তু এই মামলায় অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র পলাতক। তাই তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা যায়নি। অন্য দিকে, গত ২৫ নভেম্বর বিনয়ের ভাই বিকাশকে সশরীরে বা ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির করানো যায়নি। সেই কারণে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া আরও এক দফা পিছিয়ে যায়। প্রসঙ্গত, এই মামলায় যে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হল, তাঁরা প্রত্যেকেই শর্তাধীন জামিনে রয়েছেন।
গত শুনানিতে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর মামলার চার্জ গঠন। ওই দিন সকল অভিযুক্তকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি, বিকাশের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার মামলা কী অবস্থায় রয়েছে, তা জানার জন্য প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষকে মেল-ও করেন বিচারক। আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত যদি বিকাশকে প্রেসিডেন্সি জেলে থাকতে হয়, তা হলে সেই দিন তাঁকে যাতে অন্তত ভার্চুয়ালি হাজির করানো যায় আসানসোল আদালতে, সে কথাও বলেন বিচারক।
মঙ্গলবার অবশ্য সব অভিযুক্তই আদালতে হাজির ছিলেন। বিকাশ-সহ তিন জন ভার্চুয়ালি হাজিরা দেন। কয়লা পাচার মামলায় সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটে মোট ৫০ জনের নাম ছিল। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, চার্জ গঠনের প্রক্রিয়াকে মোট পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটিতে রয়েছে লালা, রতনেশ বর্মা এবং বিকাশের নাম। এই তিন জনের বিচারপ্রক্রিয়া আলাদা ভাবে হবে। কারণ, কয়লা পাচার মামলায় যত অভিযোগ উঠেছে, তার সব ক’টিতেই ওই তিন জনের যোগ রয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কোলিয়ারির ম্যানেজার, কেউ নিরাপত্তারক্ষী, কেউ বা আবার স্থানীয় দোকানদার।
চার্জশিটে সিবিআই দাবি করে যে, অভিযুক্তেরা প্রায় ৩১ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা চুরি এবং পাচার করেন। এর ফলে সরকারের ১৩৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয় বলে জানানো হয়। ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এই চুরি এবং পাচারের ঘটনা ঘটে বলে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। রাজ্যে রেলের বিভিন্ন সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রথমে আয়কর দফতর, তার পরে সিবিআই কয়লাকাণ্ডের তদন্তে নামে।
আগামী ২১ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন দু’জন আদালতে সাক্ষ্য দেবেন।