জামিন মামলা: ‘কাকু’-র বিরুদ্ধে নতুন কী তথ্য-প্রমাণ? CBI-কে আদালতে জানাতে নির্দেশ
এই সময় | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে হেফাজতে পেতে মরিয়া সিবিআই। এ দিকে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেপ্তার ‘কালীঘাটের কাকু’-ও। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন ওঠে সুজয়কৃষ্ণের আগাম জামিন মামলা।
সিবিআই-এর গ্রেপ্তার এড়াতে সুজয়কৃষ্ণের আগাম জামিন মামলার প্রথম শুনানিতে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘১৮ মাস ইডি মামলায় জেলে থাকাকালীন সুজয়কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে কোনও হেলদোল দেখাল না সিবিআই। ইডি মামলায় জামিনের শুনানি শেষ হয়েছে। সেই সময়ই কী এমন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেল যে তাঁকে হেফাজতে পেতে মরিয়া হয়ে উঠল সিবিআই?’ সুজয়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে সিবিআই-এর পাওয়া সেই সমস্ত নতুন তথ্য প্রমাণ দেখতে চায় আদালত। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এ দিন নিম্ন আদালত সুজয়কৃষ্ণকে ভার্চুয়ালি হাজির করার যে নির্দেশ দিয়েছে নিম্ন আদালতে তার ভিত্তিতে আলাদা করে কোনও নির্দেশ দেননি বিচারপতি বাগচী। তবে এ দিন আগাম জামিনের শুনানির মন্তব্য অর্ডারে রেকর্ড করে তা নিম্ন আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
অন্যদিকে জেলে থাকতে থাকতেই ‘কালীঘাটের কাকু’-কে হেফাজতে পাওয়ার জন্য বিচার ভবনের বিশেষ সিবিআই আদালতের অনুমতি জোগাড় করতে নাছোড়বান্দা সিবিআইও। সোমবার সন্ধ্যায় নিম্ন আদালত জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে, মঙ্গলবারই সুজয়কৃষ্ণকে এজলাসে হাজির করাতে হবে। যদিও একই সঙ্গে সোমবার শুনানির শুরুতে নিম্ন আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় সিবিআইকে বুঝিয়ে দেন, নিজেদের আইনি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে এই ব্যাপারে এগোতে হবে, আদালতের কাঁধে ভর করে নয়।
সোমবারও সুজয়কৃষ্ণকে হেফাজতে পাওয়ার জন্য সিবিআই বিশেষ আদালতের কাছে ফের নতুন করে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের আবেদন জানায়। জেল কর্তৃপক্ষ যাতে সুজয়কৃষ্ণকে ভার্চুয়ালি হাজির করান, সেই আবেদনও করা হয়েছিল। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ‘অসুস্থতা’–র কারণকে সামনে রেখে এ নিয়ে পাঁচদিন আদালতে কাকু–কে হাজির করানো গেল না। সেক্ষেত্রে তদন্তকারী অফিসার জেলে গিয়ে তাঁকে কেন গ্রেপ্তার করছেন না, তা নিয়ে সিবিআই কৌঁসুলিকে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন বিচারক। সিবিআই কোর্টকে জানায়, হাইকোর্টে কাকু আগাম জামিনের আবেদন করেছেন।
তবে বিচারক সোমবার বলেন, ‘আগাম জামিনের আবেদন করা থাকলে গ্রেপ্তারে বাধা থাকে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত ‘গ্রেপ্তার করা যাবে না’ — এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে সেই সময় পর্যন্ত তদন্তকারীদের গ্রেপ্তারের ক্ষমতা রয়েছে।’
এই পরিস্থিতিতে সুজয়কৃষ্ণের মঙ্গলবার আগাম জামিন মামলাতে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সেই গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে জামিনের মামলা করেছিলেন তিনি। কলকাতা হাইকোর্টে ইডির গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে তাঁর জামিন মামলার শুনানি শেষ হয়েছে।