• জেলার বইমেলায় ঠাঁই নেই বাংলাদেশি স্টলের
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বাংলাদেশে প্রতিদিন ছড়িয়ে পড়ছে চরম ভারতবিদ্বেষী মনোভাব। বিভিন্ন দাবি এবং প্রাত্যহিক ঘটনার মধ্য দিয়ে তার প্রকাশ ঘটছে। তাই ওপার বাংলার কোনও স্টল থাকবে না মুর্শিদাবাদ জেলা বইমেলায়। এ ব্যাপারে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা বইমেলা কমিটি। আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ৪৪তম বইমেলা। দুপুরে বহরমপুর বারাক স্কোয়ার ময়দানে মেলার স্টল সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মেলায় মোট ৮৫টি স্টল থাকছে বলে জানা গিয়েছে। গত বছর বইমেলায় ছিল বাংলাদেশের দু’টি স্টল। তবে এবার কোনও বাংলাদেশের বইয়ের স্টল থাকছে না। মেলা কমিটির এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন জেলাবাসী। ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরি অফিসার মানঞ্জয় রায় বলেন, গতবছর দু’টি বাংলাদেশের স্টল ছিল। কিন্তু এ বছর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনও বাংলাদেশের স্টল থাকবে না। এবার আমাদের ৪৪তম বইমেলার থিম হল, ‘ভাষা দিয়ে সম্প্রীতি গড়ব’। ৮৫ টির বেশি স্টল থাকবে এই মেলায়। কলকাতার ৬৩টি স্টল থাকছে। বাকি স্টলগুলি অধিকাংশই স্থানীয়।


    এবারের মেলা চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বহরমপুর বারাক স্কোয়ার ময়দানে স্থানীয় গ্রন্থাগার এই মেলার আয়োজন শুরু করেছে। জেলার পাঁচটি মহকুমা থেকে সাতদিন এই মেলায় ভিড় জমাবেন লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিবছর রেকর্ড পরিমাণ বই বিক্রি হয় এই মেলা থেকে। তাই প্রকাশনী সংস্থাগুলি মেলায় স্টল দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে। এবারও মেলায় স্টল পাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের স্টল না থাকায় সুবিধা হয়েছে স্থানীয় বই বিক্রেতাদের। 


    বহরমপুরের বাসিন্দা তথা অধ্যাপক সমিত মণ্ডল বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। সেই দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে সেখানকার মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের ভারত বিদ্বেষী কথাবার্তা এবং ভারতের প্রতি মনোভাব জানতে পেরে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। আমাদের জেলার এই বইমেলা খুবই ঐতিহ্যের। এখানে বাংলাদেশের কোনও স্টল না থাকায় খুশি হয়েছি। কমিটির সিদ্ধান্ত যথাযথ।


    ইন্দ্রপ্রস্থের বাসিন্দা টুম্পা চৌধুরী বলেন, সারা বছর বইমেলার জন্য অপেক্ষা করি। বইমেলায় গিয়ে নতুন নতুন লেখকের বই কিনি। গত বছর বাংলাদেশের স্টলগুলি থেকেও ভালো বই বিক্রি হয়েছে। এবছর ওরা ভারতের প্রতি যে রকম মনোভাব দেখিয়েছে তা সত্যি আমাদের অবাক করেছে। আমাদের জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে ওখানে। ওদের সমস্ত কিছুই বর্জন করার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রতিবাদ করা উচিত। জেলা বইমেলা কমিটি যে বাংলাদেশের কোনও স্টল রাখেনি, তাতে আমরা খুশি।


    ডোমকলের কলেজ পড়ুয়া ইসরাফিল হক বলেন, প্রতিবছর একদিন জেলার বইমেলায় যাই। বিভিন্ন ধরনের বই কিনি। ওপার বাংলার বেশ কিছু বইয়ের স্টলও থাকে। গত বছর বাংলাদেশের স্টল থেকে একটা বই কিনেছিলাম। কিন্তু এবছর ওরা যেভাবে ভারতকে প্রতিনিয়ত ছোট করছে, তা আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছি। তাই ওদের কোনও স্টল না আসাই ভালো। সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য মেলা কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই।
  • Link to this news (বর্তমান)