প্রায় প্রথম দিন থেকে প্রথম স্থান দখলে জোর লড়াই চলছিল দুই জেলার। দক্ষিণ দিনাজপুর(বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্র) আর নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা(রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র)। খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন, তাঁর জেলাই (দক্ষিণ দিনাজপুর) পয়লা নম্বরে। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছিলেন, 'ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে এক লক্ষের অধিক সদস্য সংগ্রহ করে রাজ্যের মধ্যে সর্ব প্রথম স্থান অধিকার করেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। এই অতুলনীয় সাফল্যের জন্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি সভাপতি, জেলা বিজেপির পদাধিকারী গণ, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিধায়কগণ সহ সকল স্তরের বিজেপি কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমকে ধন্যবাদ জানাই'।
এর আগে, মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে সুকান্তের র্যাম্পে হাঁটার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায়। যা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সমাজমাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে কার্যত সেই কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ।
এদিকে সুকান্তের দাবি খারিজ করে দিয়েছে নদিয়ার এক বিজেপি নেতা। তাঁর পাল্টা দাবি, নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলাই 'ফার্স্ট বয়' হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে। ওই নেতার দেওয়া তথ্য, ত শনিবার পর্যন্ত তাঁর জেলায় সদস্য সংগ্রহ হয়েছে ১ লক্ষ ১৩ হাজার। দক্ষিণ দিনাজপুরে ১০২ বেশি। রবিবার আবার সেই হিসেব পাল্টে যায়। ফের এক এক নম্বরে গিয়েছে রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা।
বিজেপি সূত্রে খবর, রাত পর্যন্ত নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৭০ জন সদস্য হয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের সংখ্যাটা ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৩৭ জন। যদিও এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের মতে, 'দলের মধ্যে এই সুস্থ প্রতিযোগিতা তো ভাল! তবে যে সংখ্যা বলা হচ্ছে সদস্য সংগ্রহ হয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি। এটা ঠিক যে এই মুহূর্তে এক নম্বরে রয়েছে রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা'। যদিও সদস্য সংখ্যা নিয়ে কোনও তথ্যই দিতে নারাজ তিনি।
তবে লড়াই যতই হোক না কেন, বাংলায় দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান নিয়ে কিন্তু সন্তুষ্ট নন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, বৈঠকে দলের নেতাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযান নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল। এমনকী,সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে সদস্য সংগ্রহের কাজের জেলাও ভাগ করে দিয়েছেন। বেশ কিছু জেলার দায়িত্ব নিয়েছেন বনসল নিজেও। তবে জয়নগর, জঙ্গিপুর, ডায়মন্ড হারবার, মুর্শিদাবাদের মতো জেলায় বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে কার্যত ইতি টেনেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আলাদাভাবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, কাঁথি, নদিয়া উত্তর ও দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায়ও। কারণ এই জেলাগুলিতে সদস্য সংগ্রহের সংখ্যায় খুশি নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে সক্রিয় সদস্য বাড়ানোর দিকেও বাড়তি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রথম হছে কোন জেলা? চলছে এখন তা নিয়েই কনুই ঠেলাঠেলি।