• আরজি কর মামলায় রাজ্যের ‘স্যাংশন’ নিয়ে তরজা সুপ্রিমে
    এই সময় | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, নয়াদিল্লি ও সোদপুর: আরজি করের দুর্নীতি মামলায় দুই সরকারি আধিকারিক সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন প্রসিডিংস বা বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর জন্য রাজ্য সরকার স্যাংশন বা অনুমোদন দিচ্ছে না— মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এমনই অভিযোগ তুলল সিবিআই। এই অভিযোগ ঘিরে আদালতে প্রবল যুক্তি-যুদ্ধ চলে সিবিআইয়ের কৌঁসুলি তথা কেন্দ্রের সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা ও রাজ্যের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিবালের।

    দু’পক্ষের বাগযুদ্ধ থামিয়ে সিজেআই সঞ্জীব খান্না জানিয়ে দেন, সিবিআইয়ের চিঠি পেলেই রাজ্য যেন অনুমোদন দিয়ে দেয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে আরজি করের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানি চলছিল তৎকালীন সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে। তিনি অবসরগ্রহণের পরে বেঞ্চ বদল হয়েছে। এ দিনই মামলাটি প্রথম শুনানির জন্য ওঠে বর্তমান সিজেআই খান্নার এজলাসে।

    সিবিআই তাদের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এ দিন এরটি স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয়। তা খতিয়ে দেখে বেঞ্চ। এ দিন শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী বছরের মার্চে।তবে যে ভাবে সিবিআইয়ের তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে ফের হতাশা প্রকাশ করেছেন আরজি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা।

    এ দিনের শুনানি শেষে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট যখন দায়িত্ব নিতে চাইছে না, তখন অন্য চিন্তাভাবনাই করতে হবে। সেটা আইনি পথেই করব।’ তাঁর সংযোজন, ‘সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ নিয়েও আমরা খুশি নই। আবার সিবিআই আদালতে দাবি করছে, তারা নিয়মিত নাকি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, কিন্তু আদতে তা হচ্ছে না। তা-ও আশা হারাচ্ছি না। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’

    নির্যাতিতার বাবা-মায়ের কথায়, ‘দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে দেখে আমরা হতাশ। প্রাথমিক চার্জশিট দেওয়ার সময়েও আমাদের ওরা জানায়নি। যদিও চার্জশিট দেওয়ার আগে আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ওরা জানিয়েছিলেন। এখন বুঝতে পারছি, কাউকে জানিয়েই কোনও লাভ হবে না। সকলে মুখে বললেও কারও কিছু যায় আসে না।’

    আরজি করের ধর্ষণ-খুন মামলায় সিবিআইয়ের প্রথম চার্জশিটে সঞ্জয় রায়কে মূল অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার কথা বলা হলেও এখনও তাঁদের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেবেন তদন্তকারীরা। অন্য দিকে, আরজি করের দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট জমা পড়েছে সন্দীপ-অভিজিতের বিরুদ্ধে।

    তবে রাজ্য সরকার এখনও প্রসিকিউশন প্রসিডিংস শুরুর অনুমতি দেয়নি বলে এ দিন দাবি করেন তুষার মেহতা। তাঁর দাবি, দু’জনেই যেহেতু সরকারি আধিকারিক, তাই প্রসিডিংস শুরুর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল গত ২৭ নভেম্বর৷ সেই অনুমোদন এখনও আসেনি, দাবি করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা৷ সিবাল পাল্টা জানান, রাজ্য সরকার এখনও এমন কোনও চিঠি হাতেই পায়নি৷

    টাস্ক ফোর্সকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, আরজি করের পরবর্তী শুনানি মার্চে
    এই দাবি নস্যাত্‍ করে মেহতা বলেন, ‘সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিবাল হয়ত জানেন না যে, রাজ্য সরকারের দপ্তরে আগেই চিঠি জমা পড়েছে৷’ উভয় পক্ষের বিবাদ থামিয়ে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানান, চিঠি পেলে রাজ্য সরকার যেন দ্রুত সিবিআই-র হাতে ধৃত দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন প্রসিডিংস শুরুর অনুমতি দ্রুত দিয়ে দেয়৷ সিজেআইয়ের কথায় সম্মতি জানান সিবাল৷
  • Link to this news (এই সময়)