নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: অবশেষে পুরুলিয়া শহর সংলগ্ন শিমুলিয়া বাইপাসে ট্রায়াল রান হল। এর ফলে শহরের যানজট অনেকটাই কমবে বলে দাবি পুলিসের। এতদিন টাটা থেকে রাঁচি যেতে পুরুলিয়া শহরের উপর দিয়েই গাড়ি নিয়ে যেতে হতো। রাঁচি থেকে টাটাগামী গাড়ির ক্ষেত্রেও এই রাস্তাতেই যেতে হতো। পণ্যবাহী গাড়ির চাপে পুরুলিয়া শহরের ডুলমি থেকে বাসস্ট্যান্ড, ভাটবাঁধ মোড় হয়ে শহর সংলগ্ন রাঁচিরোডে যানজট লেগেই থাকত। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটত। তবে, বাইপাস চালু হওয়ায় সেই সমস্যা মিটতে চলেছে বলে দাবি পুলিসের।
পুলিস সূত্রে খবর, সম্প্রতি শিমুলিয়া বাইপাসের উপর দিয়ে ট্রায়াল রান শুরু হয়েছে। এবার টাটা থেকে রাঁচিগামী সমস্ত গাড়ি বাইপাস হয়ে সোজা বেরিয়ে যাচ্ছে। যে গাড়িগুলি টাটা থেকে বাঁকুড়া যাবে, সেগুলি বাইপাস ধরে আইমুণ্ডি মোড় থেকে ছড়রা এবং সেখান থেকে ভাঙরা মোড় হয়ে বাঁকুড়া রোড ব্যবহার করছে। ফলে কোনও পণ্যবাহী গাড়ি আর পুরুলিয়া শহরে ঢুকবে না। একইভাবে, রাঁচি থেকে যে সমস্ত গাড়ি টাটা কিংবা, বাঁকুড়া যাবে, সেগুলো ওই একই রুট ধরেই যাচ্ছে। তবে, যে সমস্ত গাড়ি শহরে প্রবেশ করবে, সেগুলি চাকরা আন্ডারপাস হয়ে শহরের প্রবেশ করবে। এক্ষেত্রে কড়াকড়ি রয়েছে পুলিসের। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কিছু গাড়ি ছাড়া কোনও পণ্যবাহী গাড়ি শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টি তদারকির জন্য ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারদের নিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিসের দাবি, এর ফলে শহরের উপর গাড়ির চাপ অনেকটাই কমে গিয়েছে। এতদিন শহরে রাঁচি-টাটা রুটের সমস্ত গাড়ি ডুলমি নডিহা রোড ধরে বাসস্ট্যান্ড, ভাটবাঁধের রাস্তা ব্যবহার করত। ফলে পুরুলিয়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় যানজট লেগেই থাকত। দুর্ঘটনাও ঘটত। শহরের যানজট সমস্যা মেটাতে বাইপাস তৈরির উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। প্রায় ১০ কিলোমিটার এই বাইপাস শিমুলিয়া থেকে শুরু হয়ে বেলগুমা, সানাঝুড়ি হয়ে চাকরা মোড়ের কাছে রাঁচি রোডে মিশেছে। তবে, বাইপাসের কাজ এখনও কিছুটা বাকি রয়েছে। তা সত্ত্বেও বাইপাস চালু করা হয়েছে।
পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালি বলেন, জাইকা প্রকল্পে পুরুলিয়া শহরে জল সরবরাহ করা হবে। ওই প্রকল্পের কাজের জন্য ভাটবাঁধ মোড় থেকে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ রাখতে হবে। তাই তড়িঘড়ি বাইপাস চালু করতে হচ্ছে। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, বাইপাসটি অসম্পূর্ণ থাকায় প্রতি পয়েন্টে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। কোনও গাড়ি যাতে ভুল রাস্তায় চলে না যায়, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। নিয়ম ভেঙে শহরে যাতে পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে না পারে, সে ব্যাপারে কড়া নজর রয়েছে। তবে, বাইপাস চালু হওয়ায় উপকৃত শহরের বাসিন্দারা। পেশায় স্কুল শিক্ষক শান্তনু মাহাত, স্থানীয় দোকানদার বিকাশ মাহাত বলেন, শহরের উপর দিয়ে বড় বড় ট্রাক চলাচল করায় ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হতো সাধারণ মানুষকে। যানজট লেগেই থাকত। বাইপাস চালু হওয়ায় যানজট অনেকটাই কমেছে।