• দলীয় নেতৃত্বকে অশান্তি এড়ানোর নিদান মমতার
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দীঘা: গত রবিবার ছিল তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ভোট। ভোট পর্বে তৃণমূল ঝড়ে উড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। বাড়তি অক্সিজেন জুটেছে জোড়াফুল শিবিরের সিলিন্ডারে। এই আবর্তে আগামী ১৫ ডিসেম্বর কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নির্বাচন রয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে পারদ চড়তে শুরু করেছে পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে। এহেন আবহেই নির্মীয়মান জগন্নাথ মন্দিরের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার দীঘায় পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয়, তার জন্য পূর্ব মেদিনীপুরে পা রেখেই দলীয় কর্মীদের মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। অশান্তি সৃষ্টির জোর চেষ্টা চালানো হলেও, তৃণমূল সুপ্রিমো তাঁর দলের কাউকে সেই প্ররোচনায় পা না দেওয়ার কথা বলেছেন। জানা গিয়েছে, সকলে যাতে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই দিকটাতেও জেলা নেতৃত্বকে বিশেষ নজর দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।।


    রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ভোট নিয়ে সোমবারই জেলার বিধায়কদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের হিসাবে, এই ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারলেই, তাঁদের জয় কার্যত শিবির মনে করছে, ভোটের আগের দু’দিন আগে থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার কোনরকম কসুর বাদ দেবে না বিরোধী শিবির। সেই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের বার্তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই জানাচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব। 


    এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ দীঘায় নামে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার।  হেলিপ্যাডের বাইরে বেরোতেই উচ্ছ্বাস আর আবেগে ভরা জনস্রোতে ভেসে যান তিনি। বেশ কিছুটা পায়ে হেঁটে রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ সারেন তিনি। তাঁকে শঙ্খ বাজিয়ে স্বাগত জানান হাজারে হাজারে মহিলা। সেখানেই তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বর্তমানে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান তথা কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি, তমলুক ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের দুই সভাপতি পীযুষ পন্ডা ও অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিড়ের মাঝেই সুপ্রকাশকে ডেকে নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশ দিতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। জগন্নাথ মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্ব সংক্রান্ত কথা ছাড়াও জেলায় দলের কাজকর্ম সংক্রান্ত কিছু নির্দেশ তাঁকে মমতা দিয়েছেন বলে স্বীকার করলেও, বিস্তারিত বলতে চাননি সুপ্রকাশ। আজ বুধবার জগন্নাথ মন্দিরের পর্যবেক্ষণে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়ক হিসেবে অখিল গিরিকেও মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকতে বলেছেন বলেও জানা গিয়েছে। আবার, তাঁর ছেলে সুপ্রকাশকেও মন্দিরের বেশ কিছু দায়িত্ব নেওয়ার কথা মমতা জানিয়েছেন বলেও খবর। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রে অখিল-সুপ্রকাশের উপরেই ফের আস্থা বাড়াচ্ছেন মমতা। 
  • Link to this news (বর্তমান)