• কুয়েত ফেরত দর্জির বাড়িতে ইডি’র হানা
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: মঙ্গলবার সাত সকালে বর্ধমানের লস্করদিঘিতে ইডি হানায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। তাও এক দর্জির বাড়িতে। অভিযোগ, অ্যাকাউন্টে বিপুল কালো টাকার লেনদেন হয়েছে। ইডি আধিকারিকরা আধাসামরিক বাহিনী নিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢোকেন। ২১ নভেম্বর তাঁর অ্যাকাউন্টে নাকি ১০ লক্ষ টাকা জমা হয়। সেদিনই তিনি চেকের মাধ্যমে সেই টাকা একজনকে তুলে দিয়েছেন। 


    দেশজুড়ে কালো টাকার লেনদেনের উপর নজরদারি চালাচ্ছে ইডি। সেই নজরদারি চালাতে গিয়েই লস্করদিঘির দর্জির অ্যাকাউন্টে একদিনেই ১০ লক্ষ টাকা জমা পড়ার বিষয়টি ইডি অফিসাররা জানতে পারেন। জমা পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টাকা উঠে যাওয়ায় আরও সন্দেহ হয়। তখন থেকেই দর্জির উপর শুরু হয় বিশেষ নজরদারি। এদিন বেশকিছু তথ্য প্রমাণ নিয়েই ইডির অফিসাররা দর্জির বাড়িতে হানা দেন।


    ইডিকে অভিযুক্ত দর্জি জানান, মঙ্গলকোটের নতুনহাটের এক শ্রমিকের মাধ্যমে দক্ষিণেশ্বরের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। সে তাঁকে বাইরে কাজ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। সেই কারণে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে। ইতিমধ্যেই অন্যজনের সাহায্যে তিনি কুয়েতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। বছর দু’য়েক কাজ করার পর ভারতে ফিরে আসেন। ফের তিনি বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করে  দক্ষিণশ্বরের ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই সময় ওই ব্যক্তি তাঁর কাছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য চান। ওই ব্যক্তি দর্জিকে বলে,  তার পরিচিত একজন বাইরে থেকে টাকা পাঠাবেন। কিন্তু তার নিজের অ্যাকাউন্টে টাকা তোলার লিমিট শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই সে দর্জির অ্যাকাউন্ট নম্বর চাইছে। 


    দর্জির দাবি, দক্ষিণেশ্বরের ওই ব্যক্তি পূর্বপরিচিত হওয়ায় তিনি কোনও সন্দেহ ছাড়াই অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর অ্যাকাউন্টে ১০ লক্ষ টাকা জমা পড়ে। দক্ষিণেশ্বরের ওই ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জানায়, অ্যাকাউন্টে জমা পড়া ১০ লক্ষ টাকা তার লোকের হাতে তুলে দিতে। তার লোক ইতিমধ্যেই বর্ধমানে পৌঁছে গিয়েছে। সেই মতো তিনি নির্দিষ্ট লোকের হাতে সেই টাকা তুলে দেন বলে ওই দর্জির দাবি। তিনি আরও জানান, যাকে তিনি টাকা দিয়েছিলেন তাকে চেনেন না। নামও নাকি জানেন না। 


    ইডি আধিকারিকরা তাঁর কথা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছেন না। তাঁকে টানা জেরা করা হয়। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কুয়েত থেকে ফিরে আসার পর বাড়িতে টেলারিংয়ের দোকান খোলেন। তবে সেটা তেমন চলে না। তিনি বলেন, টেলারিংয়ের কাজ করে সংসার চলে না। তাই আবার বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখনই ইডির অফিসাররা জানতে চান, পাকাবাড়ি তৈরির টাকা কোথা থেকে এসেছে? তিনি জানান, হাউসিং ফল অল প্রকল্পের ও জমানো টাকায় বাড়িটি করেছেন। তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারেননি অফিসারা। তাঁকে ফের তলব করা হতে পারে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)