‘তুমি আসবে বলে’, দেবের জন্য আন্দোলনও স্থগিত বিশ্ববিদ্যালয়ে
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: সেই কবে নচিকেতা চক্রবর্তী গেয়েছিলেন ‘তুমি আসবে বলেই’...। ‘তুমি’ এলে নতুন কী হবে বা থমকে যাবে সেসবের কথা ছিল গানের কলিতে কলিতে।
শুধু দেব আসবেন বলে রায়গঞ্জে যা হল, তা এককথায় অবিশ্বাস্য। সাংসদ-অভিনেতার একদিনের ঝটিকা প্রচারপর্বের জন্য স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন! বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বললেন, এভাবেই ছন্দে ফিরুক পঠনপাঠন।
গত ১২ নভেম্বর থেকে উপাচার্য দীপককুমার রায়ের বিরুদ্ধে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি। তার জেরে কার্যত লাটে উঠেছে পঠনপাঠন। পাল্টা আন্দোলনে পরিস্থিতি মোড় নিয়েছিল অন্যদিকে। দুই, মতান্তরে তিনপক্ষের টানাপোড়েনের মধ্যেও একদিনের এই আন্দোলন বিরতি দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অনেকে। তাঁদের মতে, হয়তো নতুন দিনের সূচনা করে গেলেন অভিনেতা-সাংসদ দেব। মঙ্গলবার মূলত খাদান ছবির প্রচারেই দেবের রায়গঞ্জে আসা। পাশাপাশি এদিন বিশ্ববিদ্যলয়ের নবীনবরণ অনুষ্ঠান থাকায় আন্দোলন স্থগিত রাখা হয়।
অভিনেতার সফর ঘিরে কয়েকদিন ধরেই প্রস্তুতি চলছিল। তবে এদিন সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিড় করতে থাকেন পড়ুয়ারা। নিরাপত্তাও ছিল আঁটোসাটো। দেব আসতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। অভিনেতার সঙ্গে এদিন মঞ্চে ওঠেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। ছবির প্রচার ও নবীনবরণ অনুষ্ঠানের জন্য যেভাবে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে, তা দেখে পড়ুয়ারাও চাইছেন সব জটিলতা একবারেই কেটে যাক। বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি স্কলার সুরজ পোদ্দারের কথায়, স্কলার হিসেবে আমাকেও বরণ করা হয়েছে। একদম সামনে থেকে দেবকে দেখতে পেলাম। তাঁর জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে ধন্যবাদ। আন্দোলনকারীরা তাঁদের আন্দোলন এদিন স্থগিত রেখেছিলেন।
সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী তপন নাগের সাসপেনশন তোলার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন সংগঠনের সদস্যরা। ছবির প্রচারের জন্য দেব যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন সেকথা সাংবাদিক সম্মেলন করে আগেই জানিয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তারপরই উপাচার্য ও শিক্ষাবন্ধু সমিতির টানাপোড়েন ও লাগাতার আন্দোলন মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমনকী তারকার আসা ঘিরে যাতে কোনও জটিলতা না হয়, তার জন্য সরব হন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। গত ৩ ডিসেম্বর সারা রাত ঘেরাওয়ের পর অসুস্থ হয়ে উপাচার্য সাতদিনের বিশ্রামে চলে গেলেও বিরোধিতা থেকে এক চুল সরেননি আন্দোলকারীরা। এই অনুষ্ঠানের পর আন্দোলন কি থামবে? পড়ুয়াদের আশায় জল ঢেলেছেন আন্দোলনকারীরা। সংগঠনের সদস্য সুবীর চক্রবর্তী বলেন, এদিন আমরা সকালের দিকে আন্দোলন করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানের জন্য আন্দোলন সাময়িক স্থগিত রেখেছি। সমাধানসূত্র বের না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চলবে।
জটিলতা দ্রুত কাটুক চাইছেন উপাচার্যও। তাঁর মন্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান হওয়া খুব ভালো বিষয়। জটিলতা কাটাতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। নতুন উপাচার্যের যোগ দেওয়ার কথাও রয়েছে। আশা করছি দ্রুত ছন্দে ফিরবে বিশ্ববিদ্যালয়।