নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, বাগডোগরা: অগ্রহায়ণেই শীতের কামড় উত্তরবঙ্গে। পাহাড় থেকে সমতল সর্বত্র তাপমাত্রা নিম্নমুখী। মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাহাড়ের উঁচু উপত্যকায় হালকা তুষারপাতের খবর মিলেছে। তিনবছর পর দার্জিলিং পাহাড়ে ফের তুষারপাতের প্রত্যাশা বাড়ছে। বড়দিনের মুখে পর্যটকরা বরফ পড়ার আশায় পাহাড়ে ঘাঁটি গেড়েছেন। ঘন কুয়াশার জেরে বিপর্যস্ত বিমান পরিষেবা। বাগডোগরা বিমানবন্দরে কয়েকটি উড়ান নামতেই পারেনি। সেগুলি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সড়ক পরিবহণ পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে নেমেছে ট্রাফিক পুলিস। সন্ধ্যায় ও ভোরে দূরপাল্লার যানবাহন চালকদের তারা গরম জল ও চা খাওয়াচ্ছে।
কয়েকদিন ধরেই দার্জিলিংয়ে তাপমাত্রা কমছে। এদিন সকালে একঝলক সূর্যের দেখা মেলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা উধাও হয়ে যায়। গোটা পাহাড় ঢেকে যায় কুয়াশায়। পাশের কালিম্পং জেলার ছবিটাও ছিল একই। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এদিন দার্জিলিং রাজভবন ও সেন্ট জোসেফ কলেজ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১ এবং ৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরেই এমন পরিস্থিতি। সান্দাকফু সহ পাহাড়ের উঁচু উপত্যকায় সামান্য তুষারপাতের খবরও মিলেছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দার্জিলিং শহর, ঘুম সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় তুষারপাত হয়েছিল। এবার নভেম্বর থেকে এপর্যন্ত সান্দাকফুতে তিনবার তুষারপাত হয়েছে। বড়দিনের মুখে এনিয়ে পর্যটকরা রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। দার্জিলিংয়ের ম্যালে ভিড় করেছেন প্রচুর পর্যটক। তাঁরা কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড় উপভোগ করছেন। আসন্ন বড়দিনের ছুটিতেও পাহাড় ভ্রমণের পরিকল্পনা নিয়েছেন অনেকেই। তাঁরা তুষারপাতের আশা করছেন। ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, বড়দিন উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই পাহাড়ে হোটেলের প্রায় ৬৫ শতাংশ ঘর বুকিং হয়ে গিয়েছে। ওই সময় তুষারপাতের সম্ভাবনা আছে কি না, তা নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন পর্যটকরা।
এদিন শিলিগুড়ি, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে দিনের অধিকাংশ সময় ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন। সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। সমতলভাগ কার্যত ঠান্ডায় জবুথবু। একদিন পর মালদহে সূর্যের দেখা মিললেও শীতের কামড় ছিল অব্যাহত। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের অবস্থাও ছিল একই। সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা জানান, বড়দিনে পাহাড়ে তুষারপাত হবে কি না এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে আজ, বুধবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হবে। দিনের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়বে। সকাল ও সন্ধ্যায় কুয়াশার দাপট থাকবে।
কুয়াশার জেরে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় এদিন বেলা ১১টা পর্যন্ত কোনও বিমান ওঠা-নামা করেনি বাগডোগরায়। সকাল ৮টা ২৫ মিনিটের পরিবর্তে ১১টা ২৫মিনিট নাগাদ নামে বেঙ্গালুরুর একটি বিমান। কলকাতা, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, হায়দরাবাদ ও দিল্লির বিমান দীর্ঘক্ষণ আকাশপথে ঘুরপাক খায়। মুম্বই-বাগডোগরার একটি বিমান গুয়াহাটিতে এবং দিল্লি-বাগডোগরার দু’টি বিমান কলকাতার দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হন বিমানযাত্রীরা। (তালিকায় তাপমাত্রা ডিগ্রি সেলসিয়াসে)