আর জি কর মামলা: এক মাসের মধ্যে ট্রায়াল শেষ করুন, সিবিআইকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: আর জি কর মামলার বিচার প্রক্রিয়া এক মাসের মধ্যে শেষ করার ব্যাপারে সিবিআইকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য এবং সিবিআইয়ের মতো বাঁধল বচসা। তদন্তের প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু অভিযুক্ত দুই সরকারি অফিসার সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে জেরা করার অনুমোদন এখনও রাজ্য সরকার দিচ্ছে না বলেই অভিযোগ করল সিবিআই। যদিও তা খণ্ডন করেছে রাজ্য।
এদিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানতে চান, নিম্ন আদালতে কী অবস্থায় রয়েছে মামলা? কত দিনে শেষ হবে বিচারপ্রক্রিয়া? জবাবে সিবিআই জানায়, ৫১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ। এক মাসের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, তাহলে আমরা রেকর্ডে লিখছি যে এক মাসের মধ্যে ট্রায়াল শেষ হবে। ঠিক আছে? এই প্রশ্নে চাপে পড়ে তুষার মেহতার আবেদন, দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হবে, এমনটা রেকর্ডে লেখা হোক। যদিও সুপ্রিম কোর্ট জানায়, চেষ্টা করুন এক মাসের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে।
আর জি মামলায় সিবিআই তিন বিষয়ে তদন্ত করছে। ১) ধর্ষণ ও খুন। ২) তথ্য প্রমাণ লোপাট। ৩) আর্থিক দুর্নীতি। এদিন আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে সিবিআই। কিন্তু কোনও কেসে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে কি? জানতে চান দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, আর্থিক দুর্নীতির মামলায় দুই অভিযুক্ত সরকারি পদে ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের (প্রসিকিউশন) জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। ২৭ নভেম্বর রাজ্যের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও অনুমতি মেলেনি। যদিও রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিবাল জানান, এরকম কোনও অনুরোধের চিঠি আমরা পাইনি।
অন্যদিকে, এদিন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আবেদনকারী। বিনীত গোয়েল নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করেছিলেন বলেই অভিযোগ। যা এ ধরনের মামলায় করা যায় না। তাই এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বিনীত গোয়েলের নামে মামলা হয়েছে। তবে শীর্ষ আদালতে মামলার জন্য হাইকোর্টে শুনানি হচ্ছে না। তাই সুপ্রিম কোর্ট থেকে এই মামলা প্রত্যাহারের অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতি।
চিকিৎসক, নার্সদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট আগেই ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠন করে দিয়েছে। তবে ওই ফোর্সকে পশ্চিমবঙ্গ সহ রাজ্যগুলির কোনও সুপারিশ থাকলে তা আগামী ছ’ সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে টাস্ক ফোর্স ১২ সপ্তাহ পরে একটি রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা দেবে। যেহেতু ঘটনা আর জি করের। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সুপারিশ মামলার সব পক্ষ বিশেষ করে রাজ্যের জুনিয়র, সিনিয়র ডাক্তারদের দিতে হবে। আগামী ১৭ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।