লক্ষ্য নাশকতা, ভিভিআইপি জোন ও সীমান্ত অঞ্চলে উড়ছে জঙ্গিদের ড্রোন
বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্য এবং কলকাতার বিভিন্ন ভিভিআইপি জোন ও সীমান্ত লাগোয়া জেলায় নজরদারি ও নিরাপত্তায় এবার অ্যান্টি ড্রোন ইউনিট তৈরি করছে রাজ্য পুলিস, যাতে এই সমস্ত এলাকায় অবৈধ ড্রোন উড়তে দেখলেই সেগুলি তৎক্ষণাৎ নীচে নামিয়ে আনা যায়। সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে অনুমতি মেলার পর এই ড্রোন কেনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে খবর।
গোয়েন্দারা বিভিন্ন তথ্য থেকে জানতে পেরেছেন, ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী সীমান্ত এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছে। চালক বিহীন এই যন্ত্র থেকে ছবি তোলা হচ্ছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গার। মূল লক্ষ্য, জায়গা চিহ্নিত করে নাশকতা চালানো। অনেক সময় ড্রোন ব্যবহার করে মাদক ও ছোট আগ্নেয়াস্ত্র বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী পাঠাচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পারছেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পর সীমান্তের ওপারের জঙ্গি সংগঠনগুলি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে গোয়েন্দাদের।
রাজ্য পুলিস সূত্রে খবর, সীমান্ত ছাড়িয়ে বিভিন্ন জেলার ভিতরে চলে আসছে এই অবৈধ ড্রোন। মাঝরাতে বিভিন্ন জায়গার ছবি তুলে কয়েক মিনিট পর বেরিয়ে যাচ্ছে। নাইট ভিশন ক্যামেরা যুক্ত এই ড্রোন ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালানোর পিছনে নির্দিষ্ট অভিসন্ধি আছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। শুধু তাই নয়, জেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে লাগামছাড়া ভাবে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। অসামরিক বিমান পরিবহণ দপ্তর ও স্থানীয় থানা থেকে অনুমতি না নিয়েই ড্রোনগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য যে সমস্ত সংস্থা ড্রোন ব্যবহার করছে, তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি নিজেদের ড্রোন পাঠিয়ে ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে পারে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা। তবে বেশ কয়েকজন ভিভিআইপি-র বাড়ি ও জোনের উপর ড্রোন ওড়ায় উদ্বেগ বেড়েছে গোয়েন্দাদের। একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ও দর্শনীয় স্থানের উপর প্রায় ড্রোন উড়ছে বলে নজরে এসেছে পুলিসের। নো ফ্লাইং জোনেও এর ব্যবহার বেড়েছে সম্প্রতি।
সেই কারণেই ড্রোন ওড়ানো নিয়ে এবার কড়াকড়ি পদক্ষেপ করতে চাইছে রাজ্য পুলিস। বেআইনিভাবে ড্রোন উড়তে দেখলেই নামিয়ে আনা হবে। অবৈধ ড্রোনের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্লক করার জন্য অ্যান্টি ড্রোন কেনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরজন্য আলাদা একটি ইউনিট তৈরি হবে। প্রাথমিকভাবে পাঁচটি অ্যান্টি ড্রোন কেনার কথা ভাবা হয়েছে। ভিভিআইপি জোনে এগুলি রাখা থাকবে। পাশাপাশি সীমান্ত লাগোয়া থানাগুলিকে তা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। এগুলি সংশ্লিষ্ট এলাকায় নজরদারি চালাবে। এরজন্য প্রয়োজনীয় টাকার অনুমোদন মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। অ্যান্টি ড্রোন তৈরির দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলছেন অফিসাররা। অত্যাধুনিক ক্যামেরা ও প্রযুক্তি সম্পন্ন ড্রোন কেনাই লক্ষ্য রাজ্য পুলিসের।