• ‘লাইটার আমার গার্লফ্রেন্ড, আপনাকে দেব না’, নাজেহাল রক্ষীরা
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নন্দন হোক কিংবা রবীন্দ্র সদন, সিনেমা দেখার জন্য বিশাল লাইন পড়ছে সিনেপ্রেমীদের। ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবের চিত্রটা শহরজুড়ে এমনই। তাই নিরাপত্তার প্রশ্নেও এতটুকু ছাড় দিতে চায় না প্রশাসন। প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশের সময় দর্শকদের ব্যাগ পরীক্ষা করা হচ্ছে। খাবার, জলের বোতল কিংবা সিগারেট-লাইটার নিয়ে ‘প্রবেশ নিষিদ্ধ’। তবে এসব নিয়ম-কানুন কানে তুলতে চান না সিনেবোদ্ধারা। তাই পুলিসের সঙ্গে বচসা লেগেই রয়েছে। নানা ধরনের কটূক্তিও উড়ে আসছে রক্ষীদের উদ্দেশে। তাঁরা মেজাজ না হারিয়ে হাসিমুখেই সামাল দিচ্ছেন বিচিত্র সব ‘দাবি’। এক দর্শককে লাইটার নিষিদ্ধ বলতেই তাঁর সরস উক্তি, ‘লাইটার আমার গার্লফ্রেন্ড, আপনাকে দেব না।’ রক্ষীও মানতে নারাজ। শেষ পর্যন্ত লাইটার ফেলে দিয়েই সিনেমা দেখতে প্রবেশ করলেন তিনি। রক্ষীর হাতে কিন্তু দিলেন না। 


    এক সূত্রের কথায়, বাইরে বড় বড় করে লেখা, খাবার ও জলের বোতল নিষিদ্ধ। তবুও লোকজন বচসা করেই চলেছেন। সেদিন একজন বললেন, আমি ২০ বছর ধরে নন্দনে সিনেমা দেখতে আসছি। নিয়ম কানুন আপনি আমাকে শেখাবেন? ব্যাগ পরীক্ষা করতে হবে বললেই, নাক সিঁটকোচ্ছেন অনেকে। কেউ বলছেন, ‘বাড়াবাড়ি’, কেউ আবার ‘অসভ্যতা’ বলে চলে যাচ্ছেন। এক পুলিস কর্মী বললেন, বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে গিয়ে ভিতরে সব খাবে আর নোংরা করবে। সেই কারণেই এরকম নিয়ম। এক দর্শকের প্রশ্ন, ‘আমি কি সিনেমা দেখতে দেখতে সিগারেট ধরাব?’ কিন্তু সূত্রের খবর, অতীতে দেখা গিয়েছে, বাথরুমে গিয়ে অনেকেই সিগারেট ধরিয়ে ফেলেন। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে এইটুকু নিয়ম কানুন মানতেই হবে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছু কিছু বোদ্ধা অথচ অবাধ্য দর্শক নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করছেন না। 


    গত বছর অনুরাগ কাশ্যপের ‘কেনেডি’ ছবি দেখানোর সময় প্রবল ভিড়ের চাপে নন্দনের মূল ফটক ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। তাই এই বছর অতিরিক্ত সাবধান পুলিস। বেশ কয়েকটি ভুয়ো ডেলিগেট ও গেস্ট কার্ড ধরা পড়েছে। যা চলচ্চিত্র উত্সবের ইতিহাসে নজিরবিহীন। 


    নন্দন চত্বরেই খোলা হয়েছে পুলিস কন্ট্রোল রুম। সেখানে সারাক্ষণই পুলিস কর্মীরা বসে থাকেন সহায়তার জন্য। সূত্রের খবর, দিনের মধ্যে অন্তত ২০ জন আসছেন ফ্রি পাসের আশায়। এসে বলছেন, ‘কাউন্টার খুলতে বলুন না। পাস পেলাম না।’ পুলিস বোঝাচ্ছে, পাস শেষ হয়ে গেলে তো কাউন্টার বন্ধ হবেই। আবার কাল আসবেন। এক পুলিস কর্মীর কথায়, বেশিরভাগ লোকই ডেইলি পাস না পেয়ে এখানে আসছেন। আমরা যতটা সম্ভব সাহায্য করছি। 
  • Link to this news (বর্তমান)