মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ‘বঙ্গীয় হিন্দু রক্ষা সমিতি’র আয়োজনে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তের কাছে হাজরাতলা মোড়ে বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে গিয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার বারে বারে অনুরোধ এবং বাড়তি দাম দিয়ে জমি কেনার কথা বললেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার জমি না দেওয়ায় ভারত, বাংলাদেশের মধ্যে অনেক জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারা যায়নি বলে অনুপ্রবেশ বাড়ছে। দুষ্কৃতীমূলক কার্যকলাপও বাড়ছে। বাংলাদেশে ধৃত সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি জানিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘মানবাধিকারের সব সীমা লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাংলাদেশে মৌলবাদীরা হিন্দুদের নিশ্চিহ্ন করতে নেমেছে। গোটা পৃথিবী এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। ও’পার বাংলার অত্যাচারিত হিন্দুদের পাশে দাঁড়াতে এ’পার বাংলা থেকেও আওয়াজ উঠছে।’’ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাজকে সমর্থন করার জন্য সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করবেন কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশিই তাঁর হুঁশিয়ারি, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে আক্রমণ বন্ধ না-হলে আগামী মাস থেকে সীমান্তে পণ্যবাহী ট্রাকের যাত্রাপথ লাগাতার অবরোধ করা হবে।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘মাননীয় বিরোধী দলনেতা, আপনি কেন এখানে সময় নষ্ট করছেন? দয়া করে দিল্লিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জয়শঙ্করকে বোঝান না বাংলাদেশকে ঠান্ডা করতে। রাজ্য পুলিশ সীমান্ত দিয়ে তো বাংলাদেশ যেতে পারে না!’’ কুণালের আরও মন্তব্য, ‘‘এখানে এত সংলাপ দিয়ে কী লাভ হচ্ছে? শুভেন্দুবাবু এক বার মুখ ফুটে বলুন, মোদির উচিত একটা বিমান নিয়ে ঢাকায় গিয়ে এ সব বন্ধ করতে বলা!’’
সরব হয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএমও। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘নানা রকম কথার প্রতিযোগিতা চলছে! মুখ্যমন্ত্রী আগে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিন। ইডি, সিবিআই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তো তাঁর কথা হয়ই। এটা নিয়েও কথা বলুন, বলুন যে সীমান্তে সমস্যা হচ্ছে!’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মতে, পশ্চিম এশিয়ায় যা ঘটছে, তার পরবর্তী ‘লীলাক্ষেত্র’ হতে চলেছে দক্ষিণ এশিয়া। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে তিনি বলেছেন, ‘‘আরএসএসের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। কেন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে এমন মন্তব্য করতে হচ্ছে? কেন চার মাস পরে বিদেশ সচিবকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে? এখানে মানুষের নানা বিষয় আড়ালে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী কাজিয়া করছেন শুধু বাংলাদেশ নিয়ে।’’