মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী দিনে সারা ভারতের পর্যটক এবং ভক্তদের আলাদা করে নজর কাড়বে পুরীর আদলে তৈরি এই মন্দির। যদিও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে এই মন্দিরের তুলনা টানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘ওটা রাজাদের সময়কার। এটা সরকার করেছে। ভোগঘর, স্টোর রুম, গেস্ট রুম আলাদা আছে। সেল্ফ হেল্প গ্রুপের মেয়েদের ব্যবসা করার জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’
২০১৯ সালে দিঘায় পুরীর মন্দিরের আদলে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোভিড পর্ব কাটিয়ে ২০২২ সালের মে মাসে মন্দির তৈরির কাজ শুরু করে হিডকো। প্রায় ২২ একর জমির উপর তৈরি হয়েছে মন্দিরটি। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত ওই মন্দিরের জন্য প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ বার থেকে এখানে রথযাত্রা হবে। মন্দির পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ডে থাকবেন ১৩ জন সদস্য। তার মধ্যে থাকছেন পুরীর মন্দিরের পাঁচ জন, সনাতনী প্রতিনিধি হিসাবে চার জন এবং চার জন স্থানীয় পুরোহিত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ট্রাস্টির নেতৃত্বে থাকবেন মুখ্যসচিব। সদস্যদের মধ্যে থাকছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক, জেলার পুলিশ সুপার, ইসকন এবং সনাতন ধর্মের প্রতিনিধি এবং দিঘার জগন্নাথ দেবের মন্দিরে যিনি পুজো করেন, তিনি। এক জন এডিএম এই মন্দির-সহ পর্যটন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ট্রাস্টি বোর্ডে তিনি থাকছেন না। তিনি প্রথম বার দেখে গেলন। মুখ্যমন্ত্রীর আশা, ‘‘আগামী কয়েক হাজার বছর দরে বাংলার সমুদ্রতীরে অন্যতম তীর্থধাম হবে এই জগন্নাথ মন্দির।’’
দিঘার জগন্নাথ ধামের মূল দরজাটি থাকবে চৈতন্যদ্বারে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন ওই জায়গার নাম হবে ‘চৈতন্যদ্বার জগন্নাথ ধাম’। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি জায়গার সদ্বব্যহার হয়েছে। পুরীতে যেমন ধ্বজা তোলা হয়, সে ব্যবস্থাও এখানে থাকছে। পুরীর মন্দিরের মতোই প্রতিদিন এখানেও মন্দিরে পতাকা তোলা হবে। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন উদ্বোধন হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। এ বার প্রথম বার রথযাত্রা হবে এখানে। রথযাত্রায় একটা সোনার ঝাড়ু থাকে, আপনারা জানেন। ওটার জন্য আমার পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেব।’’
পুরো কাজের জন্য হিডকোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যনন্ত্রী। তিনি আরও জানান, ওই স্থানে পুলিশ পোস্ট, রথ রাখার জায়গা ইত্যাদি তৈরি হবে। কয়েকটি অতিথি নিবাস থাকবে পুরোহিতদের জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এখানে আমি কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চাই না। আমি কিন্তু ট্রাস্টের মেম্বার নই। এখানে যা করছি স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে করছি। বাকিটা ট্রাস্টির সদস্যেরা করবেন।’’