• চিকিৎসকের নামে রাস্তার ফের নাম বদল, চর্চা হাওড়ায়
    আনন্দবাজার | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • হাওড়া শহরের প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীর আমলে দেওয়া রাস্তার নাম মুছে ফেলার পর্ব শুরু হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। মঙ্গলবার সেই পর্বের সমাপ্তি টানলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড সংলগ্ন ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের নাম ভোলানাথ চক্রবর্তী সরণি থেকে পাল্টে প্রয়াত ফুটবলার শৈলেন মান্নার নামে করার নির্দেশ দিলেন তিনি।

    এ দিন পূর্ব মেদিনীপুর রওনা হওয়ার আগে হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে জেলাশাসক পি দীপপ প্রিয়াকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, যেহেতু হাওড়ার সন্তান শৈলেন মান্নার নামে ওই শহরে কোনও রাস্তা নেই, তাই এই রাস্তার নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই নির্দেশের পাশাপাশি, রাস্তাটির দুরবস্থা দূর করে দু’পাশে সৌন্দর্যায়নের নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ফেরার পথে শৈলেন মান্নার নামাঙ্কিত ফলক উন্মোচন করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।

    এর আগে ২০১৭ সালে তৃণমূল পুর বোর্ড ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের নামকরণ করেছিল প্রখ্যাত হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক ও কলকাতার প্রাক্তন শেরিফ ভোলানাথ চক্রবর্তীর নামে। সে সময়ে হাওড়ার মেয়র পদে ছিলেন ভোলানাথবাবুরই ছেলে, চিকিৎসক রথীন চক্রবর্তী। বর্তমানে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। সেই কারণেই রাস্তার নাম পরিবর্তনের এই নির্দেশ কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত ভাল মনে নেননি তৎকালীন মেয়র রথীন। তিনি বলেন, ‘‘ওই রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল মেয়র পরিষদের বৈঠকে, আমার ইচ্ছায় হয়নি। শৈলেন মান্নার নামে আস্ত স্টেডিয়াম আছে। চিকিৎসক ভোলানাথ চক্রবর্তীর নামে শুধু রাস্তাটিই ছিল। এই নাম পরিবর্তন কি খুব জরুরি ছিল?’’

    কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন ড্রেনেজ ক্যানাল রোড হাওড়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। পুরসভায় তৃণমূলের নির্বাচিত বোর্ড থাকার সময়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে ঢোকার মুখে একটি বিশাল তোরণের মাথায় ভোলানাথ চক্রবর্তী সরণি লেখা থাকত। বছর দুয়েক আগে সেই নাম মুছে শুধুমাত্র তোরণের দু’টি কোণে ওই চিকিৎসকের ছবি লাগানো হয়। বাকি তোরণে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ও সরকারি প্রকল্পের নাম লেখা হয়।

    নবান্ন থেকে এই তোরণ পেরিয়েই মুখ্যমন্ত্রী ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে আসেন। এ দিনও ওই রাস্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেলিপ্যাডে এসেছিলেন। সেখানে জেলাশাসক ও নগরপালের সঙ্গে কথা বলার পরেই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সংক্রান্ত প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি জেলা প্রশাসনকে এই ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের নাম পাল্টে শৈলেন মান্না রোড করতে বলেছি। রাস্তার দু’পাশে সৌন্দর্যায়ন করতে বলেছি। সেই সঙ্গে রাস্তার পাশে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কয়েকটি দোকানও করা হবে।’’

    এই নির্দেশের পরেই হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলাশাসক ও নগরপাল। পরে সুজয় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন ওই রাস্তার নাম শৈলেন মান্নার নামে করতে। এই নিয়ে জেলাশাসক ও নগরপালের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাস্তাটি মেরামতের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)