ঘটনাটি এক মাস আগের। ধৃতেরা তরুণীকে ফোন করে দিল্লি পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখার আধিকারিক বলে পরিচয় দেন। প্রথমে তাঁরা তরুণীকে ভয় দেখান। তরুণীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তাঁরা। প্রতারকেরা জানান, অভিযোগ মিটমাট করতে হলে ৬৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা দিতে হবে। ফোনের ও পার থেকে বিভিন্ন ভাবে তরুণীকে ভয় দেখাতে থাকেন তাঁরা। শেষে গ্রেফতার হওযার আশঙ্কায় তরুণী অভিযুক্তদের দাবি মতো টাকা দিয়ে দেন।
পরে চারুমার্কেট থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলে জানা যায়, তরুণীর বিরুদ্ধে আদৌ ওই জাতীয় কোনও অভিযোগ নেই। তদন্তে নেমে একাধিক জায়গায় হানা দেন পুলিশকর্মীরা। তাতে মঙ্গলবার শিয়ালদহের একটি হোটেল থেকে দু’জনকে পাকড়াও করে পুলিশ। প্রতারকদের হাতিয়ে নেওয়া টাকারও সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ধনজির নামে থাকা একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই ৬৬ লাখ টাকা গিয়েছিল। অপর জন তাঁর সহযোগী। ধৃতদের থেকে তিনটি মোবাইল, একটি সিম কার্ড এবং ব্যাঙ্কের বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। শহরবাসীর সচেতনতা বৃদ্ধিতে সমাজমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রচারও চালানো হচ্ছে। সন্দেহজনক কোনও ফোন এলে সে বিষয়ে পুলিশকে দ্রুত জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাইবার অপরাধের এই নতুন পন্থা ঘিরে উদ্বেগে রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ। কখনও পুলিশ সেজে, কখনও ইডি-সিবিআই আধিকারিক সেজে, কখন আয়কর দফতরের আধিকারিক বা শুল্ক দফতরের আধিকারিক সেজে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। সম্ভাব্য শিকার বেছে নিয়ে তাঁকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করা হয়। বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছে। ডিজিটাল গ্রেফতার বলে যে কিছু হয় না, তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে প্রচার চালাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থাগুলিও।