তৃণমূলের তরফে প্রকাশ্যেই বলা হয়েছে, সংসদ সুষ্ঠু ভাবে চলবে কি না, তা ঠিক হচ্ছে কংগ্রেস এবং বিজেপির ইচ্ছার উপরে। তারা চাইলে অধিবেশন চলছে। না-চাইলে চলছে না। তার ফলে অন্য দলগুলি সংসদে নিজেদের কথা বলতে পারছে না বলেও অভিযোগ করেছে বাংলার শাসকদল। লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘অধিবেশন চলবে কি চলবে না, তা ঠিক হচ্ছে কংগ্রেস এবং বিজেপির ইচ্ছার উপর। কংগ্রেস অধিবেশন চাইলে বিজেপি হট্টগোল করছে, আবার বিজেপি চাইলে কংগ্রেস হট্টগোল করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না।’’ যদিও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘‘আমরা চাই অধিবেশন চলুক। বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার চুপ করাতে চায় বিরোধীদের। তাই ওরাই অস্থিরতা তৈরি করছে।’’
শীতকালীন অধিবেশনের শুরু থেকেই আদানি ইস্যু নিয়ে তোলপাড় সংসদ। কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা দফায় দফায় সংসদে বিক্ষোভ করেছে। দফায় দফায় মুলতুবি হয়েছে লোকসভা এবং রাজ্যসভা। রাজ্যসভা যা-ও বা খানিকটা সচল ছিল, লোকসভায় হট্টগোল লেগেই রয়েছে। তবে তৃণমূল শুরু থেকেই আদানি ইস্যুতে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রেখেছিল। বাংলার শাসকদলের বক্তব্য, তাদের কাছে আদানির থেকেও অগ্রাধিকারের বিষয় ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনায় বকেয়া অর্থ পাওয়ার দাবি। পাশাপাশি, মণিপুর নিয়েও সরব হতে চেয়েছিল তৃণমূল। বাংলার শাসকদল মনে করে, আদানি ইস্যু একেবারেই কংগ্রেসের। এর সঙ্গে বাংলার কোনও সম্পর্ক নেই। ফলে সেই বিষয়ে সমন্বয় রাখা মানে কংগ্রেসের ‘লেজুড়বৃত্তি’ করা। সেই পথে হাঁটতে চায়নি তৃণমূল। বরং তারা চেয়েছিল, অধিবেশন চলুক। কিন্তু হট্টগোলের জেরে সে সব কিছুই করতে পারেননি বাংলার তৃণমূল সাংসদেরা।
তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি শাসকদল। কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দল। এই দুই দলের জাঁতাকলে পড়ে বাকি দলগুলি আর তাদের কথা বলতে পারছে না। কংগ্রেসের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয়ের ক্ষেত্রেও দূরত্ব রাখছে তৃণমূল। ধনখড়ের বিষয়ে এই অধিবেশনে প্রথম বার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সার্বিক বোঝাপড়া, সমন্বয় দেখা গিয়েছিল। কিন্তু পরের দিনই আবার ‘শৈত্য’ দেখা গেল। শুধু তা-ই নয়, বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসকেও এক বন্ধনীতে ফেলল তৃণমূল।