ঝাড়গ্রামে কর্মতীর্থ ৮ বছর ধরে বন্ধ অবস্থায় পড়ে, ভগ্নদশা
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রাম শহরের এক প্রান্তে তৈরি কর্মতীর্থ আট বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। তিন-চার কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ভবনটি ভগ্নদশায় পড়ে রয়েছে। ভিতরে ঝোপাঝাড়, সাপখোপের আড্ডা। প্রধান গেটে লাগানো তালায় জং ধরে গেছে। এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের স্বনির্ভর করে তোলার উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়েছে।
প্রকল্পের লক্ষ্য, কর্মতীর্থে বেকার যুবক-যুবতীরা দোকানঘর পাবেন। স্বাধীনভাবে ব্যবসা করে তাঁরা স্বনির্ভর হয়ে উঠবেন। সেই পরিকল্পনাকে সামনে রেখে পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মতীর্থটি গড়ে তোলা হয়। অভিযোগ, প্রশাসনের ভুল পরিকল্পনার কারণে কর্মতীর্থটি চালু করা যায়নি। জনবসতিহীন এলাকায় কর্মতীর্থ গড়ে তোলা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুরসভা একে অপরের দিকে দায় ফেলেছে। কর্মতীর্থ চালু না হওয়া নিয়ে পুরসভা দায় এড়িয়েছে। জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, কর্মতীর্থ চালু করতে না পারলে পুরসভা তাদের ফিরিয়ে দিক। পুরসভার চেয়ারম্যান কবিতা ঘোষ এদিন বলেন, জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় কর্মতীর্থটি গড়ে তোলা হয়েছিল। স্থানীয় যুবক-যুবতীদের কর্মতীর্থের ঘর দেওয়া হয়েছিল। লোকজন না আসায় কর্মক্ষেত্রটি চালু করা যায়নি। গত আট বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। তবে কর্মতীর্থটি চালু করা যায় কি না, সেটা দেখা হবে। স্থানীয় কাউন্সিলার সোনা মল্ল বলেন, ওয়ার্ডের এই এলাকাটি জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে। জনবসতি খুব বেশি নেই। স্বাভাবিকভাবেই কর্মতীর্থটি যে উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়, তা এখানে সফল হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত দাস বলেন, কর্মতীর্থটি এখন ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। প্রশাসন ইচ্ছে করলেই ভবনটিকে অন্যকাজে ব্যবহার করতে পারত। কয়েক কোটি টাকা দিয়ে তৈরি ভবনটি বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে। অপর এক বাসিন্দা বলেন, কর্মতীর্থ এমন জায়গায় হওয়া দরকার, যেখানে মানুষজনের যাতায়াত থাকবে। লোকজন এসে কেনাকাটা করবেন। আমাদের কাছে এটাই বিস্ময়, এমন একটি জায়গায় কর্মক্ষেত্র কীভাবে তৈরি করা হল। প্রশাসনের পরিকল্পনার অভাবেই কর্মতীর্থ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। জেলা সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডী বলেন, বিষয়টি নিয়ে অবগত আছি। কর্মতীর্থটি চালু করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, জেলা প্রশাসন কর্মতীর্থটিকে পুরসভার হাতে হস্তান্তর করেছিল। পুরসভা কর্মতীর্থটি চালু করতে না পারলে জেলা প্রশাসনের হাতে ফিরিয়ে দিক। -নিজস্ব চিত্র