• শিক্ষকের অভাবে লাভপুরে বন্ধ জুনিয়র স্কুল চত্বরেই বসছে নেশার আসর
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন: স্কুলের বিল্ডিং রয়েছে, আছে সমস্ত রকম পরিকাঠামো। কিন্তু শিক্ষক ও পড়ুয়ার অভাবে শুরু হওয়ার কয়েক মাস পর থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে লাভপুরের আবাডাঙা শ্রীধর জুনিয়র হাইস্কুল। আর সেই সুযোগেই স্কুল চত্বরে সন্ধ্যা নামলে বসছে মদের আসর। ক্লাস রুমের সামনের ফাঁকা মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে মদের বোতল ও গ্লাস। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করছেন, প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এই অবস্থা। যদিও বিষয়টি সামনে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে লাভপুর ব্লক প্রশাসন। স্কুল চত্বর পরিষ্কারের পাশাপাশি নজরদারি রাখা ও আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন করে স্কুল চালু করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

    এলাকায় রয়েছে হাইস্কুল। কিন্তু কোনও গার্লস স্কুল নেই। শিক্ষাদপ্তর ও ব্লক প্রশাসনের কাছে এমন দাবি করেছিলেন আবাডাঙা গ্রামের বাসিন্দারা। সেইমতো ২০১৫ সালে প্রশাসন ও গ্রামবাসীরা মিলে স্কুল তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। আবাডাঙার ৫৮ জন বাসিন্দা মোট দুই বিঘা জমি দান করেন স্কুলের জন্য। তারপরে ২০১৯ সালে গড়ে তোলা হয়‌ আবাডাঙ্গা শ্রীধর জুনিয়র হাইস্কুল। প্রথমে অতিথি শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ে পঠন পাঠন শুরু হয়। কিন্তু সেই শিক্ষক চলে যেতেই দীর্ঘ চার বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে স্কুলটি। পড়ুয়ারাও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য স্কুলে চলে গিয়েছে। আর সেই সুযোগে দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা বিদ্যালয়টি হয়ে উঠেছে নেশাড়ুদের আখড়া। কিছুটা দূরেই রয়েছে একটি মদের দোকান। তাই সন্ধ্যা নামলেই স্কুলের মাঠে বসছে মাতালদের আসর। বিদ্যার অঙ্গন যেখানে পড়ুয়াদের শিক্ষাদান করা হতো, সেখানে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মদের বোতল, গ্লাস সহ নেশার বিভিন্ন সামগ্রী। ক্লাসরুম থাকলেও সীমানা প্রাচীর নেই। এছাড়াও দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করার কারণে চারিদিকে আগাছার জঙ্গল হয়ে রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা এই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, বিদ্যালয়টি শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই শিক্ষকের অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারফলে সমস্যায় পড়ে এখানকার পড়ুয়ারা। তাই স্থানীয়রা দ্রুত বিদ্যালয়টিকে নতুন করে শুরু করার আবেদন জানিয়েছেন শিক্ষাদপ্তর ও প্রশাসনের কাছে। অন্যদিকে লাভপুর ব্লক প্রশাসনও শিক্ষা পরিদর্শকের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।

    স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় সাহা, সদানন্দ কোনাই বলেন, এলাকার পড়ুয়াদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে এই স্কুল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কোনও শিক্ষক নেই, তাই ছাত্রছাত্রীরা অন্যত্র চলে গিয়েছে। ফাঁকা স্কুল চত্বরের দখল নিয়েছে নেশাড়ুরা। 

    লাভপুর ব্লক স্কুল পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়টি আমরা গ্রামবাসীদের থেকে জেনেছি। কে বা কারা সেখানে নেশা করছে তা দেখা হচ্ছে। শিক্ষকদের এখানে দ্রুত নিয়োগ করার বিষয়টি চিন্তা করা হচ্ছে। 

    লাভপুর ব্লকের বিডিও শিশুতোষ প্রামাণিক বলেন, বিদ্যালয় চত্বরে মদের আসর বসার বিষয়টি জানার পর সেখানে পরিদর্শন করা হয়েছে। অবশ্যই স্কুল চত্বর পরিষ্কার করা হবে। পাশাপাশি আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই স্কুল যাতে পুনরায় শুরু করা যায়, তার চেষ্টা চলছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)