এগরাতে প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে দুর্নীতি দমন শাখার হানা
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: হিসেব বর্হিভূত ৮০লক্ষ টাকা আয়ের মামলায় এগরা পুরসভার প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে দুর্নীতি দমন শাখার অভিযান ঘিরে তোলপাড় গোটা শহর। পুরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডে কসবা-এগরায় ওই ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি। তাঁর নাম চন্দন দাস। ২০১৮-’২২ সালের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত ৮০লক্ষ টাকার সম্পত্তি তৈরির অভিযোগে দুর্নীতি দমন শাখা মামলা রুজু করে। তারপর মঙ্গলবার ওই ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযান চলাকালীন মাত্র তিন হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি ছাড়াও কলকাতায় তাঁর ফ্ল্যাটেও অভিযান চালিয়েছে স্টেট অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরো।
২০১২ সাল থেকে ২০২২সাল পর্যন্ত এগরা পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন চন্দন দাস। ২০১৭ সাল থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে এগরার মহকুমা শাসক, জেলাশাসক এবং মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে অভিযোগ যাওয়া শুরু হয়। বিল্ডিং প্যান অনুমোদনের নামে টাকা আদায়, বিভিন্ন সরকারি স্কিমে আর্থিক অনিয়ম সহ নানা ইস্যুতে অভিযোগ জমা পড়ে। পুরসভার ১৮কোটি টাকার জল প্রকল্প সঠিকভাবে রূপায়ণ না হওয়া, ৮নম্বর ওয়ার্ডে একটি রাস্তাকে দু’টি নাম ব্যবহার করে দু’বার বিল পেমেন্ট, গ্রিন সিটি মিশনের টাকা ভুয়ো প্রকল্পের মাধ্যমে তুলে নেওয়া সহ প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছিল। ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮থেকে ধারাবাহিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জমা পড়ে। ২০১৮-’২২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ৮০লক্ষ টাকা আয় বর্হিভূত সম্পত্তি তৈরির অভিযোগ জানিয়ে দুর্নীতি দমন শাখা এফআইআর করে। মঙ্গলবার তদন্তকারীদের একটি টিম এগরা শহরে ওই ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে গিয়ে অভিযান চালায়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান ঘিরে তোলপাড় হয়। ওই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠার পরই দু’বছর আগে তাঁকে এগরা থেকে উত্তরবঙ্গে ধূপগুড়ি পুরসভায় বদলি করা হয়। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। এই মুহূর্তে লম্বা ছুটিতে তিনি এগরাতেই আছেন। তবে, দুর্নীতিদমন শাখার এই অভিযান নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ইঞ্জিনিয়ার। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ইঞ্জিনিয়ারের চার-পাঁচটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এছাড়াও আত্মীয়স্বজনদের নামে বিপুল টাকা জমা করা হয়। সবটাই তদন্তের আওতায় রয়েছে। তবে, ওই ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে এসিবি(অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো)-র হানার পরই কোটি কোটি টাকা এবং বিপুল পরিমাণ সোনা বাজেয়াপ্ত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। শুধু গুজব নয়, তার সঙ্গে টাকা ও সোনার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যদিও এসিবি-র পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ছবি সঙ্গে এগরার অভিযানের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই টাকা এবং সোনা এগরা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। ওই ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি থেকে নগদ তিন হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এগরা পুরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শেখ মহম্মদ হোসেন ২০১৬ সাল থেকে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার চন্দন দাসের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী থেকে জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে এসেছেন।