নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ওড়িশা, অন্ধ্র সহ বিভিন্ন রাজ্যে যাচ্ছে আলু
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
সুখেন্দু পাল, বর্ধমান: হিমঘরে মজুত থাকা আলু যাতে ভিনরাজ্যে যেতে না পারে তারজন্য প্রতিটি সীমানায় কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। তারপরও ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যে আলু যাচ্ছে। এমনই ‘ইনপুট’ সরকারের কাছে রয়েছে। কৃষি বিপণন দপ্তর জানিয়েছে, হিমঘরে ২৮ দিনের মতো আলু মজুত রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে নতুন আলু বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ আসবে না। তারফলে বাইরে আলু পাঠানো হলে দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে। আমজনতার কথা ভেবেই বাইরে আলু পাঠানোর উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী নিজেদের ফায়দা তোলার জন্য ভিনরাজ্যে আলু নিয়ে যাচ্ছে।
রাজ্য সরকার জানতে পেরেছে, উত্তর দিনাজপুর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আলু ভিনরাজ্যে যাচ্ছে। সেই জেলার ২৬ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক বিহারের মধ্যে রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে একশ্রেণির ব্যবসায়ী এবং হিমঘর মালিক। এছাড়া জঙ্গলের পথ ধরেও ছোট গাড়িতে আলু ওড়িশায় যাচ্ছে। যে ট্রাকগুলিতে আলু ভিনরাজ্যে পাঠানো হচ্ছে সেগুলি সরকার চিহ্নিত করেছে। সেই ট্রাকগুলির রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং গাড়ির নম্বর রাজ্য সরকারের কাছে রয়েছে। প্রতিদিনই ৯-১২টি ট্রাক শুধু ভুবনেশ্বর যাচ্ছে। পাঞ্জাব থেকে আলুবীজ এরাজ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। ফিরে যাওয়ার সময় সেই ট্রাকগুলিতেও আলু ভিনরাজ্যে যাচ্ছে।
প্রশাসন জানতে পেরেছে, মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া থেকে পিকআপ ভ্যানের মতো গাড়িতে ৫০-১০০ প্যাকেট আলু রাজ্যের সীমানা পার করছে। মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার কিছু আলুর এরাজ্যে চাহিদা থাকে না। সেগুলি মূলত বাইরে যায়। কিন্তু একশ্রেণির ব্যবসায়ীর জন্য সেই আলুও বাইরে পাঠানো বন্ধ রয়েছে। ওই ব্যবসায়ীরা ভিনরাজ্যে ভালো আলু পাঠানো বন্ধ করলে সেগুলি বাইরে যেতে পারত। রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, রাজ্য সরকার সবসময় সাধারণ মানুষের কথা ভাবে। গতবছর রাজ্যে আলু উৎপাদন কম হয়েছিল। এবছর ‘ডানা’র প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে আলু চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। নতুন আলু বাজারে আসতে এখনও সময় লাগবে। সেকারণে বাইরে আলু নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তারপরও একশ্রেণির বড় ব্যবসায়ী অন্য রাজ্যে আলু নিয়ে যাচ্ছে। সরকার সবার উপর নজর রাখছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঞ্জাব থেকে সাত-আট ট্রাক নতুন আলু কলকাতার বাজারে আসছে। তা পর্যাপ্ত নয়। পুরনো আলুর উপরই বাজার নির্ভর করছে। তাই রাজ্যের প্রতিটি সীমানায় চেকিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও আলুভর্তি ট্রাক কীভাবে ওড়িশা বা অন্য রাজ্যে পৌঁছে যাচ্ছে তার কারণ খুঁজতে সরকার তদন্ত শুরু করেছে।