আবাসের তালিকায় নাম বাদ, জীর্ণ ঘরে ফিরতে নারাজ হরিশ্চন্দ্রপুরের গৃহবধূ
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীর্ণ এক কামরার বাড়িতে থাকতে চাননি বধূ। প্রায় সাত মাস আগে দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বাবার বাড়ি। পরিযায়ী শ্রমিক স্বামী কেরামত আলির আশা ছিল বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর পেলে ফিরে আসবেন স্ত্রী। আবার সংসার করবেন চুটিয়ে। সেই স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে কেরামতের। এবার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তাঁর নাম। স্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাড়ি না করা পর্যন্ত তিনি আর সন্তানদের নিয়ে ফিরবেন না।
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা কেরামতের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। পুনরায় সার্ভের জন্য আবেদন জানিয়ে তাঁর নামটি ব্লকে পাঠিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ ও ২০২২ সালে আবাস যোজনার তালিকায় কেরামতের নাম ছিল। এবার তিনি বাদ পড়েছেন। কেন এমন হল অবাক গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরাও বলছেন, ঘর পাওয়ার যোগ্য দাবিদার কেরামত। তাঁর বাড়িটি ঝুঁকে পড়েছে। মাথা নিচু করে ঢুকতে হয়। ফাঁকফোকর দিয়ে কনকনে ঠান্ডা বাতাস ঢুকছে। আক্ষেপ করে কেরামত বললেন, আমার বাস্তুভিটা ছাড়া এক ছটাক জমি নেই। ১২ বছর স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই সংসার করেছি। দু’মুঠো ভাত জোগাড়ের আশায় দিল্লিতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করি। আবাসের সার্ভের কথা শুনে বাড়ি ফিরেছিলাম। ব্লক থেকে আধিকারিকরা ঘরের ছবি তুলে নিয়ে গেলেও নাম আসেনি। পাকা বাড়ি না হওয়ায় স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গিয়েছে।
কেরামতের অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা কোহিনুর বিবির স্বামী আহমেদ হাসান ঘরের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা দিতে পারিনি বলে নাম বাদ দিয়েছেন। কোহিনুরের কথায়, টাকা চাওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। নাম বাদ দেওয়ার ক্ষমতা সদস্যের নেই। সবকিছু ব্লক থেকে হয়েছে। তবে পুনরায় সার্ভের জন্য তাঁর নাম ব্লকে পাঠিয়েছি। বিডিও তাপস কুমার পাল বলেন, এই ধরনের কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। নাম কেন বাদ গেল দেখছি। তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি দেখা হবে।
আবাসের তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় হতাশ পরিযায়ী শ্রমিক কেরামত আলি।-নিজস্ব চিত্র