সংবাদদাতা, হবিবপুর: বিদ্যালয়ের দরকারি কাগজপত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতিতে জড়ালেন শিক্ষকেরা। ঘটনাটি বামনগোলা ব্লকের জগদলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।
শিক্ষকদের একাংশের দাবি, গত জুন মাসে প্রধান শিক্ষক অবসর নেওয়ার সময় রেজ্যুলেশন করে বৈধভাবে বিদ্যালয়ের সমস্ত দরকারি কাগজপত্র সহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব তপন কুমার মণ্ডলকে দিয়েছিলেন।
যদিও অন্য অংশ সেই দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, পরবর্তীতে জুলাই মাসেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব জীতেন্দ্রনাথ বর্মনকে দিয়েছেন ডিআই। তখন থেকে তিনিই বিদ্যালয়ের সব দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
জীতেন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, ডিআই আমাকে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। নতুন শিক্ষক কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন। সেজন্য রোস্টার চাইলে তর্কবিতর্ক শুরু হয় তপনবাবুর সঙ্গে। এরপর এক শিক্ষক আমাকে ধাক্কা দেন। অন্যরা তার প্রতিবাদ করেছিলেন।
স্কুল সূত্রে খবর, গত সোমবার বিদ্যালয়ে এক নতুন শিক্ষক কাজে যোগ দিতে এসেছিলেন। বিদ্যালয়ে শূন্যপদ রয়েছে কি না সে বিষয়ে জানতে জীতেন্দ্রনাথ রোস্টার চান তপনের কাছে। তিনি দিতে অস্বীকার করলে তর্কাতর্কি শুরু হয়। শিক্ষক বিমান পাল সেখানে এসে তপনকে কটূ মন্তব্য শুরু করেন। সেই ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’)। যার একটিতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বিমানবাবু কটূ মন্তব্য করছেন তপনকে। বিমানবাবু বলেন, তপনবাবু এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে নেই। ডিআই জীতেন্দ্রবাবুকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। তাহলে দরকারি কাগজপত্র তিনি কেন হস্তান্তর করবেন না। আমি কাউকে কটূ মন্তব্য করিনি।
পাল্টা তপনবাবুর মন্তব্য, প্রধান শিক্ষক অবসরের সময় নিয়ম মেনে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বর্তমানে জীতেন্দ্রনাথবাবু দায়িত্বে থাকলেও তাঁর বৈধ কাগজ নেই। আমি এখনও ইস্তফা দিইনি। কী করে তাঁর হাতে বিদ্যালয়ের দরকারি কাগজপত্র দিতে পারি।
জেলা তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি জয়নেন্দ্র কুমার পাঠকের অভিযোগ, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একজন শিক্ষককে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বেআইনিভাবে। পরে অন্যান্য শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দায়িত্ব নেন। ডিআই অফিসের একাংশের সাহায্যে পূর্বতন টিআইসি’র ফোন নম্বর সরকারি পোর্টালে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। পরে আমাদের সংগঠনের চাপে পড়ে নতুন টিআইসি’র নম্বর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ডিআই অফিসে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষই টেলিফোনে বিষয়টি জানিয়েছে। মালদহের বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।