নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গের বহু নদী কার্যত বিপন্ন। নদীর নাব্যতা কমছে। জল ধারণ ক্ষমতাও আর আগের মতো নেই। মাছ, জীববৈচিত্র, জলজ উদ্ভিদ - সবেরই পরিবর্তন ঘটছে। ভুটান থেকে ভেসে আসা ডলোমাইটের কারণে নদীর উপরিভাগে সাদা আস্তরণ পড়ে যাচ্ছে। নদী পার্শ্ববর্তী বনভূমিতেও তার প্রভাব পড়ছে। শীতে নদী শুকিয়ে গেলেও সরকারিস্তরে তেমন উদ্যোগ নেই। যা দেখে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ মহল। এই পরিস্থিতিতে আন্তঃসীমান্ত নদী গবেষক সমন্বয়করা কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন নদীর শীতকালীন অবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। আগামীতে এই পর্যবেক্ষণ উত্তরবঙ্গের নদীগুলির অবস্থা উন্নয়নে বিশেষ কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগে বর্ষার সময় নদীতে যে পরিমাণ জল থাকতো, এখন আর তা দেখা যায় না। শীতের সময় বহু নদী শুকিয়ে যায়। এই অবস্থায় নদী রক্ষার্থে বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠন সচেতনতামূলক প্রচার, আবেদন-নিবেদন করছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তোর্সা, মরা মানসাই, রায়ডাক-১, রায়ডাক-২, সঙ্কোশ, জোড়াই, বানিয়াদহ, নীলকুমার প্রভৃতি নদী পর্যবেক্ষণ করে ওই দলটি। ছিলেন উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট পরিবেশ প্রেমী সংগঠক তুহিনশুভ্র মণ্ডল, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও নদী রক্ষায় উদ্যোগী দেবব্রত চাকি, বিশিষ্ট কবি সুবীর সরকার। তুহিনবাবু বলেন, দিনহাটা, কোচবিহার, বারবিশা, সঙ্কোশ, কুমারগ্রামে ঘুরে ঘুরে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নদীগুলি পর্যবেক্ষণ করেছি। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নদীগুলি নিয়ে যে গবেষণা চলছে, সেখানে এই পরিস্থিতি তুলে ধরব। যেখানে উঠে আসবে শীতকালীন নদীর অবস্থা, নদীর প্রবাহ, নদীর খাত পরিবর্তন, নদীগুলিকে ঘিরে জীবন-জীবিকার অবস্থা, নদী ও নদী নির্ভর জীববৈচিত্রের কথা। উত্তরবঙ্গের নদীগুলির প্রতি ভবিষ্যতের সুস্থায়ী দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে এই রিপোর্ট কাজ করবে বলে আশা রাখি।
বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক দেবব্রত চাকি বলেন, আমরা উত্তরের নদীগুলির অবস্থা নিয়ে অনেকদিন ধরে চিন্তিত। বেশ কিছু লেখা সংকলিত হয়েছে। সেমিনার হয়েছে। আগামীতে এই পর্যবেক্ষণ নদী বিশেষজ্ঞ ও পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে।