• ওপারের নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের রক্ষা করুক কেন্দ্র: মমতা
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • প্রীতেশ বসু, দীঘা: ‘গভর্নমেন্ট মাস্ট অ্যাক্ট।’ ভারত সরকারকেই পদক্ষেপ করতে হবে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর চলতে থাকা অত্যাচার নিয়ে এমন কঠোর ভাষাতেই এবার প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দীঘায় ওপার বাংলার নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় সরাসরি নরেন্দ্র মোদি সরকারের আরও জোরালো ভূমিকার দাবি রাখলেন তিনি। বললেন, ‘বাংলাদেশ ইস্যু সম্পূর্ণভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। ফলে মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তাদেরই সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমাদের যে নাগরিকরা ফিরে আসতে চাইছেন, অবিলম্বে তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।’ 

    আন্তর্জাতিক ইস্যুতে নীতিগতভাবে কেন্দ্রের নেওয়া সিদ্ধান্তকেই মান্যতা দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। অশান্ত বাংলাদেশ নিয়েও তাঁর অবস্থান যে পৃথক নয়, তা বিধানসভায় আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের কী করা উচিত, সে বিষয়ে বুধবার মত প্রকাশ করেছেন মমতা। দীঘায় জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ‘আমি তো শুনেছি ভিসা আরও বাড়ানো হয়েছে। যাতে ওখান থেকে বেশি লোক এখানে আসতে পারে। তাহলে আমাদের লোকেদের আগে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক। অবশ্যই যারা আসতে চান, তাঁদের।’ প্রতিবেশী দেশের এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সীমান্ত সুরক্ষায় গলদ নিয়েও কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মমতা। তাঁর সাফ কথা, ‘সীমান্ত থেকে তো অনেকে চলে আসছে বলেই শুনতে পাচ্ছি। কিন্তু বিএসএফ কোথাও আটকাচ্ছে, আবার কোথাও আটকাচ্ছে না। বিমান পরিষেবাও চালু রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ একটি বর্ডারও তো বন্ধ হয়নি! আমাদের কাছে অন্তত এমন কোনও নির্দেশ আসেনি। পুরোটাই কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার। আমরা শুধু চাই, সংখ্যালঘুরা নিরাপদে থাকুক।’

    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, সব জায়গাতেই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দায়িত্ব বর্তায় সংখ্যাগুরুদের উপর। এটাই মানবিকতা। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হওয়া উচিত নয়। এভাবে কি অন্তর্বর্তী ইউনুস সরকারকে রাজধর্ম মনে করিয়ে দিলেন মমতা? এই প্রশ্ন কিন্তু রাজনৈতিক মহলে জোরদার হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশ নিয়ে গেরুয়া শিবিরের কিছু নেতার মন্তব্য মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলে তিনি গর্জে উঠেছেন। তাঁর মতে, উস্কানিমূলক মন্তব্য এবং বাজারে ছেড়ে দেওয়া একের পর এক ফেক ভিডিও—উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক পরিস্থিতিকে সাম্প্রদায়িক অশান্তির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আর সবটাই দানা বাঁধছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। তাঁর কড়া বার্তা, এমন মন্তব্য না করে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের উচিত, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা তাঁদের দলেরই সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা পালনে সাহায্য করা। মমতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘কেন্দ্রের বিরোধী দল হওয়া সত্ত্বেও আমরা কিন্তু দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করছি। অথচ, ওঁদের তো নিজেদের সরকার (কেন্দ্রে)! তাঁরা জিজ্ঞেস করতেই পারেন যে, কোনটা করা উচিত, আর কোনটা নয়। কেন্দ্রের শাসকদল কি নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে?’
  • Link to this news (বর্তমান)