রাজ্য সরকারের অসহযোগিতায় তিনটি মেট্রো প্রকল্পের জট কাটছে না: রেলমন্ত্রী
বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: দোষ সবই রাজ্যের! বাংলার আটকে থাকা মেট্রো প্রকল্প নিয়ে এমনই বোঝাতে চাইছে মোদি সরকার। বুধবার লোকসভায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, কলকাতা এবং তার সংলগ্ন এলাকায় ২০ কিলোমিটারের মেট্রো রেলওয়ের কাজ আটকে রয়েছে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণেই। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যের তিনটি মেট্রো প্রকল্প। সাড়ে সাত কিলোমিটার নিউ বারাকপুর-বারাসত মেট্রো, সাড়ে ১২ কিলোমিটার বরানগর-বারাকপুর মেট্রো এবং ৬.৬৫ কিলোমিটার সল্টলেক সেক্টর ফাইভ-হলদিরাম (তেঘরিয়া) মেট্রো। এদিন রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, নিউ বারাকপুর-বারাসত মেট্রো প্রকল্পের জন্য পর্যাপ্ত জমি দিতে পারেনি রাজ্য সরকার। জবরদখলের সমস্যাও মেটানো যায়নি। বরানগর-বারাকপুর মেট্রো প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে কলকাতা পুরসভার পাইপলাইন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে। অন্যদিকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ-হলদিরাম (তেঘরিয়া) মেট্রো প্রকল্প আটকে থাকার কারণও রাজ্যেরই টালবাহানা।
বুধবার কলকাতা মেট্রো লাইনের সম্প্রসারণ সংক্রান্ত বিষয়ে লোকসভায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে প্রশ্ন করেন তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়া থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত মেট্রো লাইনের সম্প্রসারণের কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি না, তাও জানতে চান। এরই লিখিত জবাবে কলকাতা মেট্রোর একাধিক প্রকল্পে উল্লিখিত জটের উল্লেখ করেন রেলমন্ত্রী।
এদিন লোকসভায় রেলমন্ত্রী লিখিতভাবেই জানিয়েছেন, ১৯৭২ সালে কলকাতা মেট্রো চালুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৬৬ কিলোমিটার লাইনের চলাচল শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ৪২ বছরে কলকাতা এবং তার সংলগ্ন এলাকায় ২৮ কিমি মেট্রো নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। খরচ হয়েছে ৫ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা। ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ১০ বছরে হয়েছে ৩৮ কিমি মেট্রো নেটওয়ার্কের কাজ। এক্ষেত্রে খরচ হয়েছে ২৩ হাজার ৫০ কোটি টাকা। এই প্রসঙ্গেই রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, আরও ৫৯ কিলোমিটার মেট্রো নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। তারই মধ্যে ২০ কিমির কাজ আটকে রয়েছে রাজ্যের টালবাহানায়। যদিও হাওড়া থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত মেট্রো লাইনের সম্প্রসারণ নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট জবাব এদিন লিখিতভাবে দেননি অশ্বিনী বৈষ্ণব। লোকসভায় এদিন পাস হয়েছে রেলওয়ে সংশোধনী বিল, ২০২৪। এই বিল আইনে পরিণত হলে ১৯০৫ সালের ইন্ডিয়ান রেলওয়ে বোর্ড অ্যাক্ট এবং ১৯৮৯ সালের রেলওয়েজ অ্যাক্ট একসঙ্গে জুড়ে যাবে। বিরোধীদের অভিযোগ, এর ফলে রেল বোর্ড এবং বিভিন্ন রেলওয়ে জোন ও ডিভিশনের ক্ষমতা আরও বাড়াতে চাইছে মোদি সরকার। রেলকে সম্পূর্ণ বেসরকারিকরণের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।