• টাকা দিলই না মোদি সরকার, মমতার নির্দেশে সম্পূর্ণ রাজ্যের টাকায় ফ্রেব্রুয়ারিতে শুরু ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান  
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্য সরকার বছরের পর বছর ধরে দাবি জানাচ্ছে। তবু কেন্দ্রীয় সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেনি। এই অবস্থায় আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোপুরি রাজ্য সরকারের টাকায় এই প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হতে চলেছে। বুধবার বিধানসভায় সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানান, ১২৩৮ কোটি টাকায় প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রকল্পের নজরদারির জন্য গড়া হয়েছে বিশেষ প্রশাসনিক কমিটি। বিভিন্ন কাজের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্টগুলি (ডিপিআর) তৈরি হচ্ছে। সেচমন্ত্রী আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই প্ল্যানের আওতায় কয়েকটি খাল ও নদী সংস্কারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে ইতিমধ্যেই। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে এসব কাজে রাজ্য মোট খরচ করেছে ৩৪১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। 

    গত আশির দশক থেকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করার উদ্যোগ চলছে। অতিবৃষ্টিতে দুই মেদিনীপুর জেলায় ঘাটালসহ বিস্তীর্ণ এলাকা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। এই বার্ষিক দুর্গতি দূর করতেই খুবই কার্যকরী একটি উদ্যোগ হতে চলেছে এটি। দুই জেলার ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, ডেবরা, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, ময়না প্রভৃতি ব্লক এবং ঘাটাল ও পাঁশকুড়া পুর এলাকার বন্যার প্রকোপ এতে কমবে। সেচমন্ত্রী জানান, প্রকল্পটি রূপায়িত হলে ৬৫৭ বর্গ কিমি এলাকার ১০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে আটকে আছে অনেক বছর। তাই এটি পুরোপুরি রাজ্যের টাকায় তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। 

    এদিন বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে সেচমন্ত্রী আরও জানান, সুন্দরবন নদীবাঁধ সংস্কারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ৪১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার মুখে। এই প্রকল্পে ঋণ দেবে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অনুমোদন পেলেই চূড়ান্ত ডিপিআর তৈরি হবে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ২০৫০ কোটি টাকা লাগবে বাঁধের জন্য। ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ রোপণ থেকে শুরু করে সুন্দরবনের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য নেওয়া হবে বিভিন্ন উদ্যোগ। 

    প্রশ্নোত্তর পর্বে নিম্ন দামোদর প্রকল্পটি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ডিভিসির ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত জল থেকে যে বন্যা হয়, তার নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণে তিন হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পটি হচ্ছে। এতে উপকৃত হবে হুগলি ও হাওড়া জেলা। সেচমন্ত্রী জানান, ৯৪ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকিটা শেষ হবে ২০২৫-এ। অতিরিক্ত এক প্রশ্নে বিজেপির অশোক লাহিড়ী রাজ্যের মন্ত্রী এবং শাসক দলের বিধায়করদের কথায় ‘মা’ শব্দটির ব্যবহার নিয়ে কটাক্ষ করেন। মানসবাবু জবাব দেন, ‘আমরা জন্মের পর প্রথম মাকে ডাকি। আপনারা কি বাবা ডাকেন?’
  • Link to this news (বর্তমান)