• বেলাগাম গতি! মুহূর্তে ‘রেড অ্যালার্ট’ বাসচালককে, রেষারেষি রুখতে নয়া পদক্ষেপ পরিবহণ দপ্তরের
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজপথে সরকারি-বেসরকারি বাসের রেষারেষি নিয়মিত চোখে পড়ে। বাস চালকদের এহেন খামখেয়ালিপনার খেসারত দিতে হয় আম জনতাকে। বেলাগাম গতির বলি হয়ে প্রাণ যায় নিরাপরাধ পথচারী কিংবা গাড়ি চালকদের। সম্প্রতি উল্টোডাঙার কাছে এক বেসরকারি বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় আট বছরের এক শিশুর। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থায়ীভাবে বাসের রেষারেষি বন্ধ করতে তৎপর হয়েছে রাজ্য। সূত্রের দাবি, দেশের মধ্যে প্রথম সরকারি-বেসরকারি বাস-মিনিবাসের বেপরোয়া গতিতে লাগাম পড়াতে বাংলায় অভিনব ব্যবস্থা কার্যকর হতে চলেছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট বাসের অবস্থান, গতি কমা-বাড়া সহ গোটা যাত্রাপথে যাবতীয় ‘ঠিকুজি’ মজুত থাকবে প্রশাসনের হাতে। এ প্রসঙ্গে পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা বলেন, সরকারি উদ্যোগে যুগান্তকারী একটি মোবাইল অ্যাপ আসছে। বাস চালকদের বাধ্যতামূলকভাবে ডিউটি ধরার আগে মোবাইলে সেই অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। সেখানে ওই চালকের নাম, ফোন নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর ‘পুট’ করে তা সক্রিয় করতে হবে। সেই বাস যাত্রী তুলে স্টপেজ থেকে যাত্রা শুরু পর থেকেই অ্যাপের নজরদারিতে চলে আসবে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গতিবেগের থেকে বাড়তি স্পিড বাড়ালেই চালকের মোবাইলে ‘রেড অ্যালার্ট’ আসবে। এই সতর্কবার্তার পরেও গতি বাগে না আনলে, বেসরকারি বাসের মালিক কিংবা সরকারি নিগমের কর্তাদের কাছে দ্বিতীয় লাল সতর্কতা পৌঁছাবে। তাতেও কাজ না হলে, সংশ্লিষ্ট চালকের লাইসেন্স বাতিল হবে। গোটাটাই পরিচালিত হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে।

    মঙ্গলবার কলকাতার ময়দান অঞ্চলে অবস্থিত পরিবহণ দপ্তরের তাঁবুতে এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। যেখানে হাজির ছিলেন পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন, আইজি ট্রাফিক (পশ্চিমবঙ্গ পুলিস) সুকেশ জৈন সহ বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এই বৈঠকে গোটা রাজ্যে পথ দুর্ঘটনা রুখতে বাস-মিনিবাসের রেষারেষি বন্ধ করার বিষয়ে সহমত হয় সমস্ত পক্ষ। জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য-প্রযুক্তি দপ্তর ও রাজ্য পুলিস যৌথভাবে এই মোবাইল অ্যাপ তৈরি করছে। যার মাধ্যমে যাত্রাকালে বাসের সমস্ত হালহকিকত স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা বলেন, দুর্ঘটনা ঘটার পর অনেক সময় জানা যায়, বাসের স্টিয়ারিংয়ে বসে ছিলেন খালাসি। নয়া এই অ্যাপে চালককে নিজের লাইসেন্স নম্বর নথিভুক্ত হতে হবে। সেক্ষেত্রে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা হলে, চালক নিজের দায় এড়াতে পারবেন না। এই ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই সরকারি-বেসরকারি চালকদের ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। একমাত্র লাইসেন্স প্রাপ্তরাই বাসের চালকের আসনে বসছেন, এমনটাই নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার। যাতে যাত্রী সুরক্ষাবলয় আরও মজবুত হয়। সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের ১২টি রুটের বাসকে নয়া নিয়মের আওতায় নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দিনে গোটা রাজ্যে সরকার-বেসরকারি বাসে তার প্রয়োগ হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)